যে কারণে ভেঙে যায় কারিনা-এষার কঠিন বন্ধুত্ব

  বিনোদন ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:১৪, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯

বলিপাড়ার এক সময়কার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী কারিনা কাপুর ও এষা দেওল। তারা একে অপরের খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। তবে সেই নিবিড় বন্ধুত্ব বেশি দিন টেকেনি। দুই নায়িকার মধুর সম্পর্কের স্বাদ বদলে গিয়েছিল। কিন্তু কেন? বলিপাড়ায় কান পাতলে এ নিয়ে অনেক কথাই শোনা যায়।

২০০৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে’ ছবি। যেখানে অভিনয় করেছিলেন এষা এবং জায়েদ খান। এই ছবির সূত্রেই জায়েদ এবং এষার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। শোনা যায়, সেই সময় নাকি জায়েদের প্রেমে আচ্ছন্ন ছিলেন হেমা-কন্যা।

তবে জায়েদের সঙ্গে এ সম্পর্ক একেবারেই ভালো চোখে দেখেননি হেমা। জায়েদের সঙ্গ ছাড়তে এষাকে বোঝানোর দায়িত্ব কারিনাকে দেন তিনি। কারিনা যেহেতু এষার ভালো বন্ধু, তাই হেমা ভেবেছিলেন করিনা এই নিয়ে তার কন্যাকে বোঝালে তিনি বুঝবেন।

হেমার কথামতো এই নিয়ে এষাকে বোঝান কারিনা। কিন্তু এষা তখন জায়েদের প্রেমে এতটাই মগ্ন যে কারিনার কথা শোনেননি। সেই নিয়ে কারিনা এবং এষার মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত ঘটে।

কারিনা এবং এষার বন্ধুত্বে যখন সবে ঝামেলা শুরু হয়েছে, সেই সময় নাকি আগুনে ঘি ঢালতে আসরে নামেন অভিনেতা হৃতিক রোশনের স্ত্রী সুজান খান। সুজানের ভাই আবার জায়েদ।

শোনা যায়, করিনার বিরুদ্ধে এষার কান ভাঙান সুজান। কারণ কারিনাকে সেই সময় একেবারেই পছন্দ করতেন না হৃতিকপত্নী।

সেই সময় হৃতিক রোশনের সঙ্গে কারিনার সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল বলিপাড়ায়। আর তাই কারিনাকে একেবারেই পছন্দ করতেন না সুজান। তাই কারিনার বিরুদ্ধে এষাকে নানা কথা বলেন। যার জেরে ক্রমশ অবনতি ঘটতে থাকে কারিনা এবং এষার বন্ধুত্বের।

কারিনা-এষার বন্ধুত্ব জোড়া লাগাতে আসরে নেমেছিলেন মালাইকা অরোরার বোন অমৃতা অরোরা। কিন্তু ব্যর্থ হন। অমৃতার সঙ্গেও ঝামেলা বাঁধে এষার। অমৃতাকে নাকি চড় মারেন তিনি। সেই সময় কারিনার পাশে দাঁড়ান অমৃতা। আর এরপরই এষার সঙ্গে বন্ধুত্বে ইতি টানেন কারিনা।

এর পর কারিনা এবং এষার কেরিয়ার দুই খাতে বয়েছে। বলিপাড়ার সম্রাজ্ঞীর আসন দখল করেছিলেন কারিনা। কিন্তু কেরিয়ারে তেমন সফল হননি এষা।

একই বছরে দু’জন বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। সাল ২০১২। তার পর আর সেভাবে কারিনা এবং এষাকে একসঙ্গে দেখা যায়নি।

তবে ২০১৯ সালে একটি ঘটনার পর গুঞ্জন ছড়ায় যে, কারিনা এবং এষার বন্ধুত্ব নাকি জোড়া লেগেছে। সেই বছর এষার কন্যা রাধ্যা তখতানির জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন কারিনার পুত্র তৈমুর আলি খান। এই সূত্রেই খবর ছড়ায় যে, তিক্ততা ভুলে আবার নাকি কাছাকাছি এসেছেন কারিনা-এষা।

কারিনা-এষা দুজনেই তারকা পরিবারের কন্যা। কারিনা বলিপাড়ার বিখ্যাত কাপুর পরিবারের সদস্যা। আর এষার বাবা-মা তারকা জুটি ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনী। ফলে দু’জনেই কেরিয়ার হিসেবে অভিনয়কে বেছে নেন।

তাদের বলিউডে যাত্রাপথও প্রায় একই সঙ্গে শুরু হয়। ২০০২ সালে নায়িকা হিসেবে ‘কোই মেরে দিল সে পুছে’ ছবির হাত ধরে বি-টাউনে পা রেখেছিলেন হেমামালিনী-কন্যা। কারিনা অবশ্য এর ২ বছর আগে বলিউডে পা রেখেছিলেন। ২০০০ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘রিফিউজি’। এই ছবির হাত ধরেই অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছিল কারিনার।

বয়সে কারিনা এবং এষা সমবয়সী। ১৯৮০ সালে জন্ম কারিনার। এষার জন্ম ১৯৮১ সালে। একই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন তারা। ফলে সিনে দুনিয়ায় আসার আগেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল।

শোনা যায়, সেই সময় একে অপরের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ ছিলেন কারিনা এবং এষা। কারিনার সঙ্গে অভিনেতা শাহিদ কাপুরের প্রেমের কথা তো সর্বজনবিদিত। সেই সময় কারিনা-শাহিদের সম্পর্কের খুঁটিনাটি জানতেন এষা। এমনকি, এই সম্পর্কের কথা প্রকাশ হওয়ার আগেই তা জানতেন এষা।

শুধু বন্ধুই নয়। এষাকে নাকি ছোট বোন হিসেবে দেখতেন কারিনা। একবার এক সাক্ষাৎকারে এষা প্রসঙ্গে কারিনা বলেছিলেন, ‘ও আমার অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু... ছোট বোনের মতো করে দেখি ওকে। কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়— এসব বলি ওকে। আমাদের দুজনের পছন্দ-অপছন্দও এক।’ বোঝাই যাচ্ছে, কারিনা এবং এষার মধ্যে কতখানি গলায় গলায় ভাব ছিল। 

Share This Article