শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে নিজের মতো খবর সাজিয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক
- শিশুটির বাসায় ভাতের জোগাড় হয় নিয়মিতই
- স্কুল পড়ুয়াকে দিন মজুর বলে চালিয়েছে প্রথম আলো
- পেটে ভাত না জুটলে স্বাথীনতা দিয়া কি করুম? - এমন কথা বলেনি শিশুটি।
- ২০১৪ সালে নির্বাচনে শুধু হিন্দুরা ভোট দিয়েছে এটা প্রমাণ করতে লাইনে দাঁড়ানো কিছু নারী ভোটারের কপালে লাল তিলক এঁকে ছেপেছিলো প্রধম আলো।
- ১৯৭৪ সালে বাসন্তীকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে ছাপিয়েছিলো একটি পত্রিকা। শাড়ী পরার মতো অবস্থাতেও নেই দেশের মানুষ- এমন প্রচারণা তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারকে প্রচণ্ড বিব্রত করে।
মাছ-মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো'- বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে শিশুকে ভাইরাল করা হয়েছে, বাস্তবে সেই শিশু এমন কোন কথা বলেনি।যে কথাটি তাকে দিয়ে বলা হয়েছে আদতে তার অর্থই সে বোঝেনা। সাত বছরের ওই শিশুর হাতে দশ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ছবি তুলেছেন দৈনিক প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক। এরপর কথাগুলো নিজের মতো করে লিখে দিয়েছেন। আর তাতেই ভাইরাল হয়ে গেছে মাছ-মাংশের স্লোগান।
জানা গেছে দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশিত খবরে শিশুর নাম ছিলো, জাকির হোসেন। কিন্তু বাস্তবে শিশুটির নাম সবুজ। আর কাব্যিক ভাষায় ক্ষুধার বিজ্ঞাপন করা সেই শিশুটি খেতে পায় নিয়মিতই। একাত্তর টিভি আর সংবাদ বিশ্লেষক নিঝুম মজুমদারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে সেই তথ্য।
শিশুটির বাসায় গিয়ে কথা হয় তার মা মুন্নী বেগমের সাথে। তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সবুজের নাম কিভাবে জাকির হোসেন হলো? আর তার প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া সন্তানকে কেনো দিনমজুর বলা হলো, তাতে তিনি অবাক।
মুন্নি বেগম জানালেন, রাজমিস্ত্রী বাবা আর তার আয়ে এ বছরই লাগোয়া বাথরুমসহ ঘর ভাড়া নিয়েছেন। ভাতের জোগাড় হয় নিয়মিতই। আর ছোট সবুজ কেমন করে জানবে বাজারের খবর।আর সবুজকেও দেখে বোঝা গেলো বাজার স্বাধীনতা আর চাল ডালের রাজনীতি নিয়ে কথা বলার বয়স এখনও হয়নি তার। ছবি ছাপানো হয়েছে দেখে সবুজও বললো, এই কথা আমি কইনি।
সূত্রমতে শিশুটির পেটে ভাত নেই বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি মোটেও সত্য নয়। শিশুর মা জানান, তাদের পরিবারের ইনকাম ভালো। বাসার আসবাব পত্রের মধ্যে একটি বড় আকারের ফ্লাট টিভিও রয়েছে।
জানা গেছে, ২৬ মার্চ উপলক্ষ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আশেপাশে প্রচুর ফুল বিক্রি হয় বলে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষই সেদিন ফুল বিক্রি করে। শিশু সবুজও সেদিন স্কুল শেষ করে ফুল বিক্রি করতে গিয়েছিল। কিন্তু প্রথম আলোর হলুদ সাংবাদিকের খপ্পরে পড়ে ভাইরাল হয়ে যায় সেও।
বিষয়টিকে অনেকেই ১৯৭৪ সালের বাসন্তীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। ১৯৭৪ সালে বাসন্তীকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে ছাপিয়েছিলো একটি পত্রিকা। শাড়ী পরার মতো অবস্থাতেও নেই দেশের মানুষ- এমন প্রচারণা তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারকে প্রচণ্ড বিব্রত করে।
এর আগেও ২০১৪ সালে নির্বাচনে শুধু হিন্দুরা ভোট দিয়েছে এটা প্রমাণ করতে লাইনে দাঁড়ানো কিছু নারী ভোটারের কপালে লাল তিলক এঁকে ছেপেছিলো প্রধম আলো। এবারও দেশের মানুষ খুব কষ্টে আছে, এটি বেশি করে প্রমাণ করতেই এমন ছল চাতুরির আশ্রয় নিলো প্রথম আলো।
বিশ্লেষকরা বলছেন,বাংলাদেশে নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের দাম বাড়ছে, নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ছে এটি সত্য।বৈশ্বিক মন্দার কবলে প্রায় সব দেশেই একই অবস্থা।কিন্তু এই সত্যকে পূঁজি করে অতি রঞ্জিত ঘটনার জন্ম দিয়ে কিছু গণমধ্যম নিজেদের বস্তুনিষ্ঠতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেনা, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে বিনষ্ট করছে।