ভারত ইস্যুতে বিভক্ত বিএনপির নীতি নির্ধারকরা

- মির্জা ফখরুল, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও শামা ওবায়েদ নৈশভোজে অংশ নেন।
- নৈশভোজের পর ভারত ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীরা পক্ষে-বিপক্ষে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে পড়েছে বলে জানা গেছে।
- জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানও ভারতের ঘোরবিরোধী
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার আমন্ত্রণে গত ১৬ মার্চ নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ পাঁচ নেতা। মির্জা ফখরুল ছাড়াও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও শামা ওবায়েদ নৈশভোজে অংশ নেন।
নৈশভোজের পর ভারত ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীরা পক্ষে-বিপক্ষে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে পড়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির একাংশের নেতারা মনে করেন, ভারত হল বিএনপির শক্র। ভারতের শক্ত সমর্থনের কারণেই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে এবং ভারতের কারণেই বিএনপি আন্দোলন করেও বার বার ব্যর্থ হচ্ছে।তাই ভারতের সাথে সম্পর্ক যতই গভীর করার চেষ্টা করা হোক, তাতে কোনো ফল আসবে না বলেই মনে করেন তারা।
ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে আগ্রহী ওই পাঁচ নেতা ভারতীয় হাইকমিশনারের বারিধারার বাসভবনে নৈশভোজে যাওয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খানসহ আরো অনেকেই ওই পাঁচ নেতার ওপর বিরাগভাজন হয়েছেন বলে জানা গেছে, যদিও তারা তারেক রহমানের অনুমতি নিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য দুই সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমানও ভারতের ইস্যুতে সহমত নয় বলে জানা গেছে। তাদের ঘনিষ্ঠরা জানান, বিএনপির রাজনীতির মূল ব্যাপারই হল ভারত বিরোধীতা। জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানও ভারতের ঘোরবিরোধী। সেখানে এই নৈশভোজের ব্যাপারে তারেক রহমান অবগত ছিলেন কিনা কিংবা থাকলেও তার অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা এসব বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা তারেক রহমানের অনুমতির বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়নি।
এছাড়া মির্জা ফখরুলের বাসায় প্রথমে ভারতীয় হাই কমিশনারকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানালে তিনি সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে সৌজন্যতার খাতিরে তাঁর বাসভবনে আমন্ত্রণ জানান বলে যে অভিযোগ এসেছে সেটিও বিএনপির জন্য মানহানিকর। তাই বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতীয় হাই কমিশনার যে প্রক্রিয়াতেই হোক, মূলত বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল দলটির মনোভাব বুঝতে। আদৌ বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা সেটি পরিষ্কার হওয়ার জন্য। তবে ওই মিটিংয়ের ফলে বিএনপির কোন লাভ হয়নি। কেননা তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে সরকারকে চাপ দেয়ার অনুরোধে সাড়া দেননি হাই কমিশনার। উল্টো ইস্যুটি নিয়ে বিএনপি তৃণমূলসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভক্তি ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন কূটনৈতিকরা।