নির্বাচনের আগে পুনরায় জোটবদ্ধ জামায়াত-বিএনপি!

দীর্ঘ ২২ বছর জোটবদ্ধ থাকার পর ২০২২ সালে টানাপোড়েন দেখা দেয় বিএনপি-জামায়াতের বন্ধনে। একই সঙ্গে গত বছরের আগস্টে জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যেও জোট ভাঙনের বার্তা প্রকাশ্যে আসে। এরপর থেকেই আলাদা কর্মসূচী পালন করছে দল দুটি। তবে আগামী নির্বাচনের আগেই ফের বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ হবে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির সাম্প্রতিক দূরত্বকে একটি পরিকল্পিত সাময়িক কৌশল হিসেবে অভিহিত করে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্ক ছিন্ন’ এই ধরনের খবরের আসল উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মহল ও দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা। কারণ জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি বিএনপির কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়। তাছাড়া জামায়াত হচ্ছে বিএনপির আন্দোলনে মাঠের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত মিত্র। তবে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকা ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কারণে দেশে-বিদেশে জামায়াত নিযে প্রশ্ন থাকায় বিএনপি আপাতত জামায়াতকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া বর্তমানে বিএনপি যেহেতু বৃহত্তর ঐক্য গড়ে সরকার পতনের আন্দোলনে আছে, সেহেতু জামায়াতকে একটু দূরে রেখে বিএনপি এটা প্রমাণ করতে চায় যে তারা জামায়াত নির্ভর দল নয়। কিন্তু নির্বাচনের সময় আন্দোলন বা ভোটের হিসাব মাথায় রেখে আবার জামায়াতকে কাছে টানা হবে- এটি দিবালোকের মতো ষ্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
সূত্রমতে, জামায়াত ও বিএনপির ‘সম্পর্ক ছিন্ন’ হওয়ার কৌশল তেমন একটা কাজে না আসায় দুই দলের অভ্যন্তরে এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে। কেননা নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতির কারণে আন্দোলন ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা থাকছেনা বিএনপির জন্য। আর বিএনপির একার পক্ষে সরকার পতন বা নির্বাচন বানচালের আন্দোলন সম্ভব নয়, এটি বিএনপি নেতাকর্মীরা স্বীকার করেন। কাজেই আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই আন্দোলন সফল করতে জামায়াতকে পাশে প্রয়োজন বলেই মনে করছে দলটির হাই কমান্ড।
জানা যায়, পুনরায় জোটবদ্ধ হতে দুপক্ষের তরফেই আবার যোগাযোগ শুরু হয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের সাথে সম্প্রতি এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া উত্তরার একটি বাসায়ও বিএনপি ও জামায়াত আগামী জাতীয় নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রমতে, ওই বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই ভেঙে দেয়া ২০ দলীয় জোট সক্রিয় করা বা নতুন আদলে সরকার বিরোধী সকল দলকে একত্রিত করে নতুন জোট গঠন করতে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।