শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের নেপথ্যে

সম্প্রতি জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানায় বিএনপি। যদিও একে কৌশল হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বহিষ্কারের নেপথ্যে বিএনপির অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও জানান তারা।
জানা যায়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এর আগেও দু’বার শোকজ করা হয়েছিলো তাঁকে। তবে এবারের বহিষ্কারাদেশের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইনসাফ কমিটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কারণ নতুন আত্মপ্রকাশ হওয়া এ দলটিরও দাবি অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠন করে সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।
এরই অংশ হিসেবে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন- বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন করছে। জাতীয় ইনসাফ কমিটিও সরকারের পতন চায়। সেক্ষেত্রে ইনসাফ কমিটি নিশ্চয়ই বিএনপি বা সমমনা দলগুলোর একটি অংশ। তাহলে শওকত মাহমুদকে কেন বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলো? এটি কি বিএনপির নতুন কোনো কৌশল এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক পাড়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
সমালোচকরা বলছেন, যেহেতু বর্তমান সরকারের অধীনে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি, সেহেতু সরকার বিরোধী শক্তি হিসেবে পরোক্ষভাবে কাজ করতেই নির্বাচনী বছরে এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছে বিএনপি। মূলত বিএনপির ইশারা ও অর্থায়নেই ইনসাফ কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। কাজেই এটি পুরোপুরি রাজনৈতিক ও বিএনপির আলাদা একটি উইয়ং বা বি টিম বলা যায়।
শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের নেপত্থ্যের কারণ প্রসঙ্গে সমালোচকরা বলছেন, নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে এটা বিএনপির ধুর্ত কৌশল। কারণ শওকত মাহমুদ একজন বিখ্যাত লোক। তাঁর নেতৃত্বে যারা থাকবে বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও সেই প্রভাব থাকবে। এখন শওকত মাহমুদ একটি আলাদা ফ্রন্ট তৈরি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবে। অতীতেও এর নজির দেখা গেছে। বিএনপি অনেক নেতাকে বহিষ্কার করলেও সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছে।
অন্যদিকে, শওকত মাহমুদ এর আগেও দল থেকে প্রার্থীতা চেয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি দেয়নি। এবার তো নির্বাচনেই যাচ্ছে না বিএনপি। আর এ জন্যই শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের নাটক করে জাতীয় ইনসাফ কমিটির ব্যানারে নির্বাচনে যাওয়ার পায়তারা করছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।