নাইকো দুর্নীতি মামলা: সাজা হতে পারে বেগম জিয়ার!

নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান গত ১৯ মার্চ এ আদেশ দেন। আদালতের এই আদেশের মধ্য দিয়ে শুরু হলো মামলাটির বিচার কাজ। মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৯ মে তারিখ ধার্য করা হয়েছে। এই মামলার অভিযোগ গঠন এবং সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে আরো একটি মামলায় নতুন করে বেগম জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হতে চলেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।
সুত্র জানায়, খালেদা জিয়া এরইমধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ১০ বছরের সাজা, চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। নাইকো দুর্নীতি মামলায়ও তিনি জড়িত ছিলেন এবং এটি প্রমাণ করা কোনো কঠিন কাজ হবে না। ফলে আগের দুই মামলার মতোই খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালের ৫ মে বেগম খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক।
এ মামলার অন্য সাত আসামি হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্র্যাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনিতেই দুইটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার কারণেই আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন। নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে- এ মামলাতেও তিনি সাজাপ্রাপ্ত হবেন। তাদের মতে, বেগম জিয়া নিঃসন্দেহে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, ক্ষতি করেছেন রাষ্ট্রের, এই জন্য তাকে শাস্তির মুখোমুখি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।