ইরাক যুদ্ধের সাফাই গাইলেন টনি ব্লেয়ার
ইরাক যুদ্ধের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। তিনি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানের তুলনায় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন হামলা অনেক বেশি যৌক্তিক ছিল। ব্লেয়ারের এমন সাফাই অবশ্য নতুন নয়। আগেও তিনি যুদ্ধের পক্ষে এ রকম সাফাই গেয়েছেন। পরে সবই ভুল প্রমাণ হয়েছে।
জার্মানির ডিপিএ ও ইউরোপীয় দুটি সংবাদ সংস্থাকে ব্লেয়ার বলেন, ইরাকে অভিযানে ৪৬ হাজার ব্রিটিশ সেনা অংশ নিয়েছেন। এই যুদ্ধের প্রয়োজন ছিল। কারণ ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন দেশটিতে দমন-পীড়ন চালাচ্ছিলেন। আঞ্চলিক সংঘাতকে উসকে দিচ্ছিলেন। কুর্দিদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছিলেন।
ব্লেয়ার এই যুদ্ধের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আপনি বলতে পারেন আমরা একজন স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছি।’
ইরাক বডি কাউন্ট প্রজেক্ট বলেছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর অভিযানে ইরাকে ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ২০১১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে ইরাক অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। দেশটিতে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ইরাকের উত্তরাঞ্চল জঙ্গি দল আইএসের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
৯/১১ হামলার সঙ্গে সাদ্দাম হোসেনের যোগসাজশ ছিল না। তবে যুদ্ধের পক্ষে সাফাই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দাবি করে, সাদ্দাম গণবিধ্বংসী অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছেন। পরে অবশ্য তাদের দাবি ভুয়া বলে প্রমাণ হয়। হামলার আগে ব্লেয়ার বারবারই বলেছিলেন, ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। দেশটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এসব যুক্তি দেওয়ার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে ব্লেয়ার বলেন, ‘ইউক্রেন এমন একটি দেশ, যেখানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রয়েছেন। আমার জানামতে ইউক্রেনে কখনো আঞ্চলিক সংঘাত হয়নি। দেশটি প্রতিবেশী দেশের ওপর হামলাও চালায়নি।’
ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তার উত্তরসূরি পেত্রো পরোশেঙ্কো এর পর দনবাসে রাশিয়া সমর্থিতদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করেন। রুশ তদন্তকারীরা বলছেন, এতে ২ হাজার ছয়শর বেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৫০০ জনের বেশি।