আল জাজিরাকে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
যারা ইনডেমনিটি জারি করেছিল, অধিকার হরণ করেছিল, তাদের কি বলবেন?

প্রধানমন্ত্রীর উল্টো প্রশ্নে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন আল জাজিরার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী নিক ক্লার্ক। শেখ হাসিনা পুনরায় ক্লার্কের প্রশ্নের জবাবে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, 'এমন একটি অবস্থা থেকে আমি ও আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রাম ও আন্দোলন করে দেশে গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনি।
শেখ হাসিনা! গত ১৪ বছর ধরে আপনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। পশ্চিমা মিডিয়ায় প্রায়ই আপনাকে নিয়ে 'অটোক্রেটিক লিডার’ (স্বৈর শাসক) এই দুটি শব্দ ব্যবহার করে। বিষয়টি আপনি কিভাবে বর্ণনা করবেন? আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ক এমন প্রশ্ন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
ক্লার্কের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্য এমনকি আল জাজিরাও যদি আমাকে অটোক্রেটিক লিডার বলে, তবে আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, যখন আমাদের দেশে সেনা শাসন চেপে বসেছিল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন আমার বাবা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে, ১৮ জন সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হলো, তারপর সেনা সরকার ক্ষমতা নিলো, তখন আমি দেশে আসতে পারিনি, শরণার্থী হিসেবে আমাকে বিদেশ থাকতে হয়।
এমনকি আমাকে দেশে আসতে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল, আবার যখন আমি দেশে ফিরলাম, তখন খুনিদের বিরুদ্ধে বিচার চাওয়ারও অধিকার আমার ছিল না। খুনিদের বিচার করা যাবে না, এই মর্মে 'ইনডেমনিটি' অধ্যাদেশ জারি করেছিল তারা। সংবিধান লঙ্ঘন করে সামরিক শাসন জারি করেছিল। আমার সমস্ত নাগরিক অধিকার হরণ করেছিল, তারা কি গণতান্ত্রিক সরকার ছিল? তাদেরকে কি বলবেন আপনি?
প্রধানমন্ত্রীর উল্টো প্রশ্নে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন আল জাজিরার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী নিক ক্লার্ক। শেখ হাসিনা পুনরায় ক্লার্কের প্রশ্নের জবাবে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, 'এমন একটি অবস্থা থেকে আমি ও আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রাম ও আন্দোলন করে দেশে গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনি। শুধু তাই নয় দেশে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতা আমরাই প্রতিষ্ঠা করি।'
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের আয়োজিত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলনে যোগ দিতে মার্চের প্রথম সপ্তাহে কাতারে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের ফাঁকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ক প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের রহস্য, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। ১১ মার্চ সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করে সংবাদমাধ্যমটি।