তারেকের বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি:যেভাবে ধরলো তত্তাবধায়ক সরকার

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ রাত ০৯:৪৩, রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩, ২৭ ফাল্গুন ১৪২৯

২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দিনের তত্তাবধায়ক সরকার সারাদেশের বিদ্যুতের খুঁটির হিসাব জানার উদ্যোগ নিলে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু খাম্বা কেনার কারণেই তারেকের আয় হয়েছিল হয় হাজার কোটি টাকা। 

 

 

২০০৩ সালের রমজান মাস। কার্তিকের কাঠফাটা গরমে নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের। এর ওপর ঢাকা শহরজুড়ে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। আর সারা দেশের অবস্থা আরও ভয়াবহ। এমনকি ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময়েও তীব্র লোডশেডিং। সেসময় ক্ষুব্ধ হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষিপ্ত জনতা রাস্তায় মিছিল বের করে।  

পরিস্থিতি জটিল দেখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর মূখ্য সচিব ড. কামাল সিদ্দিকীকে নির্দেশ দিলেন দ্রুত কিছু একটা করার জন্য। ড. সিদ্দিকী দ্রুতই বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলেন। কয়েকদফা বৈঠকের পর সিদ্দিকী একটি প্রস্তাবনা তৈরি করলেন। প্রস্তাবনার মূল বক্তব্য ছিল, কুইক রেন্টালের মাধ্যমে আপদকালীন বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা। ক্যাবিনেটে মূখ্য সচিব, বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় তাঁর প্রস্তাবনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। খালেদা জিয়া প্রস্তাবের ব্যাপারে একটি কথাও বলেননি। বৈঠক শেষ হলো সিদ্ধান্ত ছাড়াই।

এর দুই দিন পর ড. সিদ্দিকীকে ফোন করলেন তারেক রহমান। তাঁকে বিদ্যুৎ প্রস্তাব নিয়ে ডাকলেন হাওয়া ভবনে। সেই বৈঠকে তারেকের সঙ্গে বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনও ছিলেন। ড. সিদ্দিকী তাঁর প্রস্তাবনা ব্যাখা করলেন। তারেক মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বললেন আমরা সারা দেশে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে দিতে চাই, এজন্য আগে দরকার বিদ্যুতের খুঁটি। সারা দেশে আগে বিদ্যুতের খুঁটি সরবরাহের ব্যবস্থা করুন।

সিদ্দিকী একটু বিব্রত হলেন। বললেন এটা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে ভালো। কিন্তু এখনই এটি দিয়ে কোনো উপকার হবে না। তাছাড়া এক সঙ্গে সারা দেশে খুঁটি লাগিয়ে বিদ্যুৎ দিতে না পারলে, জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে।

ড. সিদ্দিকীর এমন কথায় ক্ষুব্ধ হন তারেক রহমান। বললেন, আপনি সরকারি চাকরি করেন। ‘জনগণ’ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। অবিলম্বে বিদ্যুতের খুঁটি কেনার ব্যবস্থা করেন।

সূত্রমতে, ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে টেন্ডার ডাকা হলো বিদ্যুতের খুঁটি কেনার। প্রথম বছর বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ৬৮৫ কোটি টাকার খুঁটি কিনল। দ্বিতীয় বছর কিনল আরও ৫২২ কোটি টাকার খুঁটি।

২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দিনের তত্তাবধায়ক সরকার সারাদেশের বিদ্যুতের খুঁটির হিসাব জানার উদ্যোগ নিলে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু খাম্বা কেনার কারণেই তারেকের আয় হয়েছিল হয় হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে, বিদ্যুতের খুঁটি যারা সরবরাহ করেছিলো সেই কোম্পানির নাম ছিল ‘খাম্বা লিমিটেড’। যে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন তারেকের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন।

ফখরুদ্দিন সরকারের তদন্তে জানা যায়, যে দামে সরকার খাম্বা লি. এর কাছ থেকে এসব খুঁটি কিনেছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তার দাম চারগুন বেশি। এছাড়া যে পরিমাণ ‘খাম্বা’দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল, তার অর্ধেকেরও কম বাস্তবে সরবরাহ করা হয়েছিল। অথচ মামুন সব বিল তুলে নিয়েছিলেন তারেকের ক্ষমতার জোরে। এভাবেই বিদ্যুৎ নিয়ে তারেকের অপকর্ম সবার সামনে উন্মচিত হয়। পরিচিতি পায় 'খাম্বা তারেক' হিসেবেও।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে বিএনপি আমলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিলো ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার মেগাওয়াট।

বিষয়ঃ বিএনপি

Share This Article


অহেতুক কিছু কথায় মূল্যবান জীবন ঝরে গেল : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন

কোটা আন্দোলন ঘিরে লাশের রাজনীতি করতে চায় বিএনপি-জামায়াত: কাদের

কঠোর নিরাপত্তায় রাজধানীতে চলছে তাজিয়া মিছিল

আজ পবিত্র আশুরা

দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা

মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

‘পত্রপত্রিকা কী লিখল সেটা দেখে নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই’

দুঃখ লাগছে, রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে তারা রাজাকার: প্রধানমন্ত্রী

নিজেদের রাজাকার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্লোগান লজ্জার: প্রধানমন্ত্রী

ইতিহাস জানে না, তাই এ স্লোগান দিতে তাদের লজ্জা হয় না