নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হবে: আল জাজিরাকে শেখ হাসিনা

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা আছে। যারা এখন তত্ত্বাবধায়ক চাচ্ছে, তারা নিজেরাই এই পদ্ধতি বিকৃত করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি কাতারে এলডিসি সম্মেলন চলার ফাঁকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার যে দাবি করছে সেটি তিনি মেনে নেবেন কিনা! সাংবাদিক নিক ক্লার্কের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আমাদের খুবই বাজে অভিজ্ঞতা আছে। বিএনপি যখন ২০০১ সালে ক্ষমতায় ছিল; তারা শুধু মানবাধিকার লঙঘনই করেনি, তারা মানুষকে হত্যা করেছে, দেশকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। সেসময় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম পাঁচবার এসেছে। অন্য অনেকের মতো আমিও ভুক্তভোগী হয়েছি।
‘শুধু তাই নয়, বিএনপির দুর্নীতির বিষয় দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রমাণিত হয়েছে। এরপর দেশব্যাপী তাদের সন্ত্রাস সহিংসতায় সারা দেশের মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়ে। দেশের পাঁচ শতাধিক স্থানে এক ঘণ্টার মধ্যে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল তারা। বাংলাদেশকে তারা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। তাদের অপকর্মের জন্য তখন জরুরি অবস্থাও জারি হয়েছিল। আমি দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছি, আমি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি,’ সাক্ষাৎকারে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি দেশে আগ্রাসী রাজনীতির সূচনা করেছিল। তারা আমাকে একাধিকবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে। ২১ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালকে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ আমার দলের ২২ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি এ নিয়ে কোনো তদন্ত, এর কোনো বিচার পর্যন্ত হয়নি।’
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি-না ! তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন শতভাগ নিরপেক্ষ হবে। আগের দুই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, অভিযোগকারীরা কোনোকিছু প্রমাণ করতে পারেনি। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছিল ও মানুষ আমার দলের পক্ষেই ভোট দিয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। কেন? কারণ, তাদের দলের নেতারা দুর্নীতি, অস্ত্র পাচার, গ্রেনেড হামলার মতো অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ছিল, পরাজিত হবার ভয়ে তারা ২৯১৩-১৪ সালে দেশব্যপী নজিরবিহীন সহিংসতা চালিয়ে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। ফলে নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো পরিস্থিতি বা প্রস্তুতিও তাদের ছিল না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।