ইউনূসের পক্ষে সাফাই গেয়ে 'ওয়াশিংটন পোস্ট' এ বিজ্ঞাপন!
![ইউনূসের পক্ষে সাফাই গেয়ে 'ওয়াশিংটন পোস্ট' এ বিজ্ঞাপন!](/Uploads/Images/News/2023/3/Image-10607-20230309085940.webp)
- ড. ইউনূস দেশব্যপী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
- সরকার তাকে কোনো ধরনের বাধা দিচ্ছে না।
- প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই দেশ-বিদেশে অবাধে আসছেন, যাচ্ছেন।
- আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তৎসংক্রান্ত অভিযোগ প্রকাশের কারণ কি?
'Global Leaders Appeal to the Bangladeshi Prime Minister Regarding the Treatment of Professor Muhammad Yunus in An Open Letter' শিরোনামে গত ৭ মার্চ 'প্রটেক্ট ইউনূস ডট ওয়ার্ড প্রেস ডট কম' নামের ওয়েব সাইটে একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। পরদিন দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমও তা প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়েছে 'ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্যায় আক্রমণের শিকার, ৪০ বিশ্বনেতা তার সমর্থনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিকট খোলা চিঠি' দিয়েছেন।
ওয়েবসাইটটির তথ্যমতে ওই চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের পূর্ণ-পাতায়ও প্রকাশিত হয়েছে। তবে সেটি পত্রিকাটির প্রতিবেদন নয়, বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া তা পত্র আকারে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে কিনা বা তার প্রাপ্তি স্বীকার সংক্রান্ত কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ইউনূসের প্রতি তার সরকারের আচরণ সম্পর্কে চিঠিটি পাঠানো হলেও উক্ত চিঠিতে সরকারের আচরণ বা ড. ইউনূস কোন ধরণের আক্রমণের শিকার তার সুনির্দিষ্ট একটি তথ্য বা ব্যাখ্যাও দেয়া হয়নি, যে বিষয়ে সরকারকে দোষারোপ করা যায় বা সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
উক্ত চিঠিতে যে ৪০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাদের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, টেড কেনেডি জুনিয়র, যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডস সদস্য ব্যারোনেস হেলেনা কেনেডি, আইরিশ রক তারকা বোনো, হলিউড অভিনেত্রী শ্যারন স্টোনও রয়েছেন।
সমালোচকরা বলছেন, ড. ইউনুস নিজের সুরক্ষায় 'প্রটেক্ট ইউনুস' নামে ওয়েবসাইট খুলে সেখানে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সংযুক্ত করে নিজেকে রক্ষার মিশনে নেমেছেন। কিন্তু তিনি কখনোই নিজ দেশের মানুষকে প্রটেক্ট বিভিন্ন দুর্যোগ ও সমস্যা থেকে রক্ষার মিশন গ্রহণ করেননি। উল্টো ক্ষুদ্র ঋণ'র নামে মানুষের দারিদ্রতাকে কাজে লাগিয়ে সুদের ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষকে আরো বিপদে ফেলেছেন। তার প্রতিষ্ঠানের সুদের ফাঁদে পড়ে বহু মানুষ নিঃস্ব হওয়ার অসংখ্য নজির রয়েছে।
এছাড়া দেশে সংগঠিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি কখনও। একজন নোবেল বিজয়ী ও বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হওয়ার সুবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গন বা ফোরামে বাংলাদেশের জন্য কথা বলবার সুযোগ থাকবার পরও তিনি তা করেননি। এমনকি বাংলাদেশের জন্য যা গলার কাটার মতো আটকে রয়েছে সেই রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও কখনও কথা বলতে শোনা যায়নি তাকে।
অন্যদিকে এই 'খোলা চিঠি' প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, চিঠিতে স্বাক্ষরকারী নেতার সংখ্যা ৪০ হলেও এটি গুরুত্বপূর্ণ বা শক্তিশালী প্রভাবক নয়। ড.ইউনূসের বিশ্বব্যপি যে বন্ধু মহল বা শুভাকাঙ্খি রয়েছেন তারা নিজে উদ্যোগী হয়ে যে এটি করেননি তা চিঠির ভাষাতেই বোঝা যায়। ইউনূসের অনুরোধে হয়তো তারা তাদের নাম ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন বা খোঁজ নিলে জানা যাবে তাদের অনেকে বিষয়টি জানেনই না।
তারা আরও বলছেন, এই চিঠি যারা ড্রাফট করেছেন তারা ইউনূসের ওপর সরকার কি ধরনের অন্যায় আচরণ করছে এর কোন প্রমাণ দূরে থাক উল্লেখই করতে পারেননি। ড. ইউনূসের দেশব্যপি কার্যক্রম পরিচালনায় কোথাও কোনো ধরনের বাধা সরকার দিচ্ছে বা দিয়েছে এমন কোনো তথ্য চিঠিতে নেই, অন্য কারো কাছেও নেই। তিনি সবসময় দেশে অবাধে বিচরণ করছেন। দেশে আসছেন, যাচ্ছেন। কোথাও কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। তাহলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সরকারের ওপর 'অন্যায় আচরণ'র অদৃশ্য দোষ চাপিয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশের হেতু কি, তা প্রশ্নই থেকে যায়।