১৬ জুলাই: গণতন্ত্র অবরুদ্ধের এক ঐতিহাসিক দিন

১৬ জুলাই ‘গণতন্ত্র অবরুদ্ধ দিবস’। ২০০৭ সালের এই দিনে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্দেশে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসভবন সুধা সদন থেকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়।দিনটিকে তাই শেখ হাসিনার 'কারানন্দি দিবস' হিসেবেও পালন করে আওয়ামীলীগ। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ সমমনা রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো দিবসটিকে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করে।
২০০৭ সালের এদিন ভোরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সহস্রাধিক সদস্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ধানমন্ডির বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। এমতাবস্থায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ফজরের নামাজ আদায় করেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে গ্রেফতার করে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে।
ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ওয়ান-ইলেভেন সরকারের নীলনক্সা অনুযায়ী আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই শেখ হাসিনার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
এ সময় শেখ হাসিনা আদালতের গেটে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩৬ মিনিটের অগ্নিঝরা বক্তৃতার মাধ্যমে তৎকালীন সরকারের হীন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের পর জরুরি অবস্থার মধ্যেই দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
পরে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত প্রতিরোধ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু কন্যার আপোসহীন ও দৃঢ় মনোভাব এবং দেশবাসীর অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
৮ সপ্তাহের জামিনে মুক্তি পেয়েই চিকিৎসার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান শেখ হাসিনা। সেখানে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কান এবং চোখসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা শেষে একই বছরের ৬ নভেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। কয়েক দফায় জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর পর দেশে ফিরলে তাকে স্থায়ী জামিন দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন সরকার।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকার গঠন করে।