‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্থায়ী মানবাধিকার সংকট তৈরি করেছে’

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে স্থায়ী মানবাধিকার সংকট সৃষ্টির অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়। পাশাপাশি মিয়ানমারে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বানও জানানো হয়েছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে বিশৃঙ্খলা চলছে। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিক্ষোভকারীরা। রক্তক্ষয়ী আন্দোলন, সংঘাত, অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ চলছেই। বিক্ষোভে ব্যাপক দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ, লোকজনকে উচ্ছেদ করতে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া এবং মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধার কারণে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সহিংসতা বেড়েছে। সরকারের অধীন নয়—এমন সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে রাখতে সেনাবাহিনী এই কৌশল নিয়েছে, যাতে এই গোষ্ঠীগুলো খাবার, তহবিল থেকে শুরু করে গোয়েন্দা তথ্য কোনোকিছুই না পায় এবং কাউকে দলেও না ভেড়াতে পারে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অনবরত আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এবং নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আসছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
তবে মিয়ানমার জান্তা সরকার এর আগে বলেছিল, দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা তাদের দায়িত্ব। দেশে কোনো রকম নৃশংতা চলার কথা অস্বীকার করে তারা বলেছিল, কেবল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বৈধ অভিযান চালানো হচ্ছে।
কিন্তু জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের মিয়ানমার টিমের প্রধান জেমস রোডহেভার বলেছেন, দেশটির প্রায় ৭৭ শতাংশজুড়ে সশস্ত্র সংঘাত চলছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন এবং সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, সংকট অবসানে আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। সূত্র: রয়টার্সের।