করফাঁকির প্রশ্ন এড়িয়ে কি প্রমাণ করলেন ড. ইউনুস

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৪৮, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১৫ ফাল্গুন ১৪২৯

সম্প্রতি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামের পশ্চিমাঞ্চলের কোকরাঝারের বড়োল্যান্ড আন্তর্জাতিক 'জ্ঞান উৎসবে' অংশ নিয়েছেন নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে ড. ইউনুসকে তার গ্রামীণ ব্যাংকের করফাঁকির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে  কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই কৌশলে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান। ড. ইউনূসের মতো নোবেল বিজয়ী ব্যক্তির ভারতীয় সাংবাদিকদের এভাবে এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে সর্ব মহলে।সামনে এসেছে ড. ইউনূসের করফাঁকি আর অর্থ কেলেঙ্কারির সব ঘটনা।

 

জানা যায়, নোবেলজয়ী ড.  ইউনূসের বিরুদ্ধে রয়েছে কর ফাঁকির গুরুতর অভিযোগ।  'বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড' (এনবিআর) জানিয়েছে, ড. ইউনূসের আয়কর রেকর্ড পরিষ্কার নয়, তার ঘোষিত আয়ের পরিমাণ, উৎস, পরিশোধিত কর, দান প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রায় ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০১১-২০১২ থেকে ২০১৩-২০১৪ কর বছরে নিজ প্রতিষ্ঠান 'ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট', 'ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট 'ও 'ইউনূস সেন্টার'-কে প্রায় ৭৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা দান দেখিয়ে বিপুল অংকের এ কর ফাঁকি দেন তিনি।

তথ্যানুযায়ী, ইতোমধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উল্লেখিত কর বছরে ফাঁকি দেওয়া আয়করের তথ্য উদঘাটন করেছে এনবিআর। ড. ইউনূস দান কর আইন, ১৯৯০-এর বিধান ব্যবহার করে তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত উল্লেখিত তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৭৭ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা দান করেন। পরে কর কর্মকর্তারা দান কর আইন, ১৯৯০-এর ধারা ১০ অনুযায়ী তাঁর  দানের বিপরীতে প্রায় ১৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা কর ফাঁকির প্রমাণ পান। এ কর পরিশোধে ড. ইউনূসকে আদেশনানামাও পাঠায় এনবিআর।

তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর বিভাগের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল কমিশন ও কর ট্রাইব্যুনালে আপিল মামলা দায়ের করেন। এ দুই জায়গায় মামলার রায়ও তার বিপক্ষে গেলে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করেন তিনি, যা বর্তমানে বিচারাধীন।

সূত্র জানায়, এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) ড. ইউনূসের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছে। তাতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকাকালে নিয়ম ভেঙে আয়কর অব্যাহতি নেওয়া, পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অনুমোদন না নিয়ে বিদেশ সফর ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়া ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান 'গ্রামীণ টেলিকম'র বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর, শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশের টাকা লোপাট, কল্যাণ তহবিলের অর্থ বরাদ্দ না করে আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে দুদক। এমনকি গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীরা তাদের প্রাপ্য লভ্যাংশের দাবিতে শতাধিক মামলা দায়ের করলে তার সমঝোতা করতে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল ২৫ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন করেন ড. ইউনূস।

সমালোচকরা বলছেন, ড. ইউনূস একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তিনি ভারতের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকির বিষয়ে সাংবাদিকদের জবাব দিতে পারছেন না এটি অত্যন্ত লজ্জার। তাঁর যদি সৎ সাহস থাকতো তাহলে তিনি অবশ্যই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতেন । কিন্তু তিনি তা না করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সাংবাদিকদের এড়িয়ে গিয়ে প্রমাণ করলেন তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article