আমানকে ফখরুলের সতর্ক, বিএনপিতে ফের অস্বস্তি

কিছুদিন আগেই কেটেছে ‘১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে খালেদার কথায়’ বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার রেশ। এর মধ্যেই ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান। ভুল লক্ষ্যে একের পর এক মিথ্যার ‘কামান’ ছুড়ে বিএনপিকে হাসির খোরাক বানাচ্ছেন সিনিয়র এই নেতা। তার এসব বেফাঁস মন্তব্যে দলে ফের দেখা দিয়েছে অস্বস্তি; যদিও এরই মধ্যে তাকে সতর্ক করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সূত্রমতে, ২১ ফেব্রুয়ারি এক আলোচনা সভায় আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, ‘আগামী বছর ফেব্রুয়ারি থেকে দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়। আগামী বছর হবে বেগম খালেদার বছর। আগামী বছর হবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বছর’। আর এমন বক্তব্যের পরই আমান উল্লাহ আমানের ওপর চটেছেন দলের নেতারা। বিতর্কিত এ মন্তব্যে বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনা।
সম্প্রতি আমান উল্লাহ আমানের এ বক্তব্য নিয়ে বিএনপি নেতারা জানান, ১০ ডিসেম্বর নিয়ে আমানের ভুল বক্তব্যের জন্য অনেক খেসারত দিতে হয়েছে বিএনপিকে। তার ওই বক্তব্যের পর কর্মসূচি ঘিরে নানা পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবায়ন করতে পারেনি দল। আমান উল্লাহ আমানের জন্যই গ্রেফতার হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র নেতারা। এসব অপরিপক্ক বা ভুলভাল বক্তব্য দিয়ে উল্টো বিএনপির ক্ষতি করছেন আমান উল্লাহ আমান।
বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মতে, আমান উল্লাহ আমানের আগাম বক্তব্যের কারণে বিএনপির অনেক পরিকল্পনাই ভেস্তে যাচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে দেয়া বক্তব্যের পর আমান উল্লাহ আমানকে ডেকে সতর্কও করেছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপরও তিনি বিতর্কিত বক্তব্য দিচ্ছেন। তার এসব বক্তব্যের পর এক ধরনের ঝুঁকির মুখে বিএনপি।
আমানের সাম্প্রতিক এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির একাধিক নেতা, যদিও তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তারা বলেছেন, রাজনীতির মাঠে সিনিয়র নেতাদের বুঝে-শুনে কথা বলা উচিত। কারো এমন কথা বলা উচিত নয়; যার কারণে হাসির খোরাক হয়ে ওঠে দল। ‘ঈদের পরে সরকারের পতনের আন্দোলন’ এমন বক্তব্য এখন হাস্যকর বাণীতে পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির আরেক সিনিয়র নেতা বলেন, আমান উল্লাহ আমানের মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার মুখে বারংবার এমন অসার বক্তব্য মানায় না। তার এসব বক্তব্যের কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন মাঠের নেতা-কর্মীরা। তবে আমান উল্লাহ আমানের এসব কথায় এখন আর কেউ তেমন গুরুত্ব দেয় না। এছাড়া তাকে এবার দলের পক্ষ থেকে কঠোর ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আমান উল্লাহ আমানের বক্তব্য রাজনীতির মাঠে কিঞ্চিৎ উত্তাপ ছড়ালেও ক্ষমতাসীন দল ও সাধারণ মানুষের কাছে হাস্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এছাড়া বিব্রত হতে হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের। সিনিয়র নেতাদের এসব বক্তব্যে কর্মীরা সক্রিয় হওয়ার চেয়ে লজ্জায় মাথা লুকানোর মতো অবস্থা হয়েছে। তাই মঞ্চে উঠে গরম বক্তব্য দিলেও তাদের শব্দ চয়নে সতর্ক হওয়া উচিত। নইলে বারবার দলটিকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়তে হবে।