আইনী প্রক্রিয়ায় বাতিল হলো দিনকালের প্রকাশনা!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:১৬, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৯ ফাল্গুন ১৪২৯

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মালিকানাধীন 'দৈনিক দিনকাল' পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করা হয়েছে।  গত ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মমিনুর রহমান পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিলের অফিস আদেশ জারি করেন।

নিবন্ধন বাতিলের পর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পত্রিকাটি বিএনপির মুখপত্র হিসেবে কাজ করতো এবং সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি প্রকাশ করার কারণে সরকারের রোষানলে পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।

তবে ২০ ফেব্রুয়ারী কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধন) আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী কোন পত্রিকার প্রকাশক যদি ৬ মাসের অধিক সময় দেশের বাইরে থাকেন, তাহলে প্রকাশকের দ্বায়িত্ব অন্য কাউকে হস্তান্তর করতে হবে। কিন্তু বিএনপি নেতা তারেক রহমান ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং এ পর্যন্ত কাউকে সেই দ্বায়িত্ব হস্তান্তরও করেননি।

এছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত অফিসের ঠিকানা ও ছাপাখানা পরিবর্তন করাও ছিল অনৈতিক।ফলে 'ছাপাখানা ও প্রকাশনা ঘোষণা' ও 'নিবন্ধন আইন ১৯৭৩ ' এর যথাক্রমে ১০, ১১, ১৬ এবং ২০(১)(খ) ধারা লঙ্ঘিত হওয়ায় পত্রিকার প্রকাশনার অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।দিনকাল ছাড়াও আরও প্রায় ২০০টি পত্রিকার নিবন্ধনও একই প্রক্রিয়ায় বাতিল করা হয়।

অন্যদিকে গত ২৬ ডিসেম্বর দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন ও পত্রিকা মুদ্রণের ঘোষণাপত্র বাতিল করলে 'দৈনিক দিনকাল'র পক্ষ থেকে স্থগিতাদেশ চেয়ে 'বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে আবেদন করা হয়।তাদের আবেদনের ভিত্তিতে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত থাকে।মাঝে শুনানি চলে। তবে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শুনানী শেষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলও পত্রিকাটির আপিল খারিজ করে দেয়।

উল্লেখ্য,  বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সরকারী কোন প্রতিষ্ঠান নয়। প্রেস কাউন্সিল হল বাংলাদেশের একটি আধা বিচারবিভাগীয় সংস্থা, যা বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইনের অধীন বাংলাদেশের সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ ও বাক স্বাধীনতা রক্ষা করে। যা নিয়ন্ত্রিত হয় সম্পূর্ণ বেসরকারীভাবে।

এর আগেও ২০২০ সালে পত্রিকাটি  তাদের কর্মচারীও সাংবাদিকদের চার মাসের বেতন না দিয়েই হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়। এবং এটি বন্ধ করার সময় কারো কোন পক্ষের সঙ্গে আলোচনাও করা হয়নি। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

গণমাধ্যম সংস্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের দোষত্রুটি তুলে ধরার অপরাধেই যদি একটি পত্রিকাকে বন্ধ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের সবগুলো পত্রিকাই বন্ধ করে দেয়া হতো। কারন বাংলাদেশের প্রথম শ্রেনীর সবগুলো পত্রিকাই নিয়মিত স্বাধীনভাবে সরকারের নানান সমালোচনা করে আসছে।

সমালোচকরা বলছেন, জনপ্রিয়তা ও প্রচার সংখ্যার দিক দিয়েও  প্রায় ৪৮ টি পত্রিকার পেছনে রয়েছে দৈনিক দিনকাল। তাই পিছিয়ে থাকা একটি পত্রিকার মুখ বন্ধ করার জন্য বেআইনিভাবে একটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করার বিষয়টি অযৌক্তিক। মূলত আইন লঙ্ঘনের কারণেই দিকালসহ আরও অন্যান্য কিছু পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করা হয়েছে।

Share This Article