টাইম ম্যাগাজিন প্রতিবেদন:শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন বাংলাদেশ পারে
এক দশকের কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলে গেছে বলে মন্তব্য করেছে টাইম ম্যাগাজিন। বিশ্বখ্যাত এই সাময়িকীর চলতি সংখ্যায় বাংলাদেশ নিয়ে চার পৃষ্ঠার প্রতিবেদন করা হয়েছে। মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আলাদা আলাদা প্রতিবেদন করা হয়েছে। সেগুলো হলো ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টার, অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (এসিআই) ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনের মূল ভাষ্য, গত এক দশকে বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। এখন বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় হার ৭ শতাংশ। ২০২৪ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে বাংলাদেশের সরকার ও বেসরকারি উভয়ই বদ্ধ পরিকর। সে কারণে বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থাও নানা ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লেগেছে বলেই মন্তব্য করেছে টাইম ম্যাগাজিন।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি হচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতি এখন বহুমুখী হচ্ছে। দেশের আইসিটি খাত দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। প্রায় ১০ লাখ মানুষ এই খাতের সঙ্গে জড়িত। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রপ্তানি আয় ১০০ কোটি ডলার চাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে টাইম ম্যাগাজিন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশনের (উইপো) বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে বাংলাদেশ ১৪ ধাপ এগিয়েছে।
টাইম ম্যাগাজিনের বক্তব্য, এই কৃতিত্বের বড় অংশীদার হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর প্রণীত ডিজিটাল বাংলাদেশ কৌশলের কারণে দেশের উৎপাদন খাতে বিপ্লব ঘটেছে। দেশের সব খাত ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে।
গত এক দশকে শিক্ষা, কৃষি, ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অভাবনীয়। এ ক্ষেত্রে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তা অকুণ্ঠিতভাবে স্বীকার করেন এসিআইয়ের চেয়ারম্যান আনিস-উদ-দৌলা। টাইম ম্যাগাজিনকে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থেই বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চান, আমরা পারি। আমাদের দেশে আগে কখনোই এতটা ব্যবসাবান্ধব প্রশাসন ছিল না।’
বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যবসাবান্ধব প্রশাসনের কারণে বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থা দেশের ৮৮টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) অর্থায়ন করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগুলোর কৌশলগত ভূমিকা আছে। ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩৯০ কোটি ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। প্রায় ৪১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এতে।
এ প্রসঙ্গে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ভূমির প্রাপ্যতা, মালিকানার স্বচ্ছতা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। এসব থাকলে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সেবার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। তাঁরা একটি ঠিকানায় সব প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন। এতে দ্রুত ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।’
এ ছাড়া প্রতিবেদনে ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ শামীমের মন্তব্য ছাপা হয়েছে। তিনি এই হাসপাতালের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কথা বলেছেন।
দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫০ লাখ। মধ্যবিত্ত শ্রেণিও বড় হচ্ছে। এইচএসবিসির এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ৯ম বৃহত্তম ভোক্তাবাজারে পরিণত হবে। তখন আর্থিক সেবা, ফটোগ্রাফি, কম্পিউটার, প্যাকেজ হলিডে ও যানবাহনের চাহিদা বাড়বে।
নতুন প্রজন্মও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন ই-কমার্স স্টার্ট আপ গড়ে উঠছে। ফলে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া থাকবে বলেই মনে করছে টাইম ম্যাগাজিন।