অতি বাম অতি ডানগুলো সব এক হয়েছে: হানিফ

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৫৬, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২১ মাঘ ১৪২৯

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিলের মাধ্যমে পঞ্চমবারের মতো দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন। ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীও। ছাত্রজীবনেই জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। সম্প্রতি দেশের সমসাময়িক রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- মানিক রাইহান বাপ্পী।

 

 

যুগান্তর: বিএনপি ১০ দফা ও রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা নিয়ে যে আন্দোলন করছে সেটা কতটুকু যৌক্তিক বলে মনে করেন আপনি?

মাহবুবউল আলম হানিফ : বিএনপি একটি জনবিচ্ছিন্ন দল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যে দলটির জন্ম হয়েছিল অবৈধ পন্থায় এবং যে দলের কার্যক্রম স্বাধীনতাবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং এ দেশের জনগণের বিপক্ষে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির শেষ সময়ে সরকার পরিচালনার সময়গুলো যদি দেখি, সরকার প্রধান ছিলেন খালেদা জিয়া, অন্যদিকে হাওয়া ভবন নামে বিকল্প সরকার গঠন করেছিলেন তারেক রহমান। যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সব দুর্নীতি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে যেন প্রতিবাদ করতে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই হাওয়া ভবনের নির্দেশেই আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তিপূর্ণ জনসমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালনো হয়েছিল। সেটাও হাওয়া ভবনের নির্দেশে। শুধু তাই নয়, ওই সময় দেশটাকে উগ্রবাদের চারণভূমি ও সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বানিয়েছিল বিএনপি। ফলে দেশ পরপর ৫ বার দুর্নীতে বিশ্বে চাম্পিয়ন হয়েছিল। এই সেই দল বিএনপি, রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। ক্ষমতার বাইরে থাকতেও ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচির নাম করে সন্ত্রাসী ও নাশকতা কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল। সরকারি-বেসরকারি সম্পদ নষ্ট করেছিল। শুধু ধ্বংস করেই ক্ষান্ত হয়নি, সাড়ে তিন হাজার মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করেছিল। এতে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এরকম একটা দলের শীর্ষ দুই নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান; যারা বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। সেই দলকে নিয়ে জনগণও ভাবে না। আওয়ামী লীগের ভাবনার কিছু নেই।

যুগান্তর: সরকার পতনের নামে যুগপৎ আন্দোলন করছে বিএনপি। সেখানে বিএনপির সঙ্গে বাম দলগুলোও যুক্ত আছে। বাম দলগুলো কেন যুক্ত হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে। এটার কারণ কী হতে পারে?

মাহবুবউল আলম হানিফ: বাম দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, আমি এটা ভাবনার বিষয় মনে করি না। যে সব অতি বাম এবং অতি ডানগুলো এক হয়েছে এরা সবাই জনবিচ্ছিন্ন দল। যাদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। এরা কোথায় একযোগে প্লাটফর্মে মিলিত হলো, না কী হলো- এটা নিয়ে ভাবনারও কিছু নেই, কথা বলার কিছু নেই।

যুগান্তর : বিএনপি সরকার পতনের নামে প্রতিনিয়ত কর্মসূচি দিচ্ছে। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থান কেমন হতে পারে?

মাহবুবউল আলম হানিফ: বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভাবনার কিছু নেই। তবে হ্যাঁ, আমরা যে বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করার চেষ্টা করি বিএনপির অতীতের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে যে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল এবং এটা শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক আদালতে এটি অভিযুক্ত হয়েছে। এ ধরনের দল যখনই রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে মাঠে নামতে চায়, তখনই জনগণের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়। আবার দেশে জ্বালাও-পোড়াও হবে। দেশের উন্নয়নে যেন বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, জনগণকে অস্থিতিশীল পরিবেশে না ফেলতে পারে। এজন্য সব সময় আওয়ামী লীগ জনগণের পক্ষে থাকে এবং জনগণকে সতর্ক করে।

যুগান্তর : সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা হয়েছে। সেখানে অধিকাংশই পুরনো মুখ। এ কমিটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কতটুকু ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন আপনি?

মাহবুবউল আলম হানিফ: সেটা জনগণই মূল্যায়ন করবে। বর্তমান কমিটি পূর্বে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে বলেই আবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যুগান্তর: বিএনপির অভিযোগ, সঠিক নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে। এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না আওয়ামী লীগ। এ অভিযোগের বিষয়ে কী বলবেন?

মাহবুবউল আলম হানিফ: বিএনপির এ সব গৎবাঁধা অভিযোগ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। সংবিধান অনুযায়ী বিএনপিকে অংশ নিয়ে জনগণ কার পক্ষে আছে সেটা যাচাই করার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।

যুগান্তর: সম্প্রতি দেশে ডোনাল্ড লুসহ নির্বাচনের আগে বিদেশি কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়ে গেছে। বিদেশিদের সফরে আওয়ামী লীগ উদ্বিগ্ন কিনা?

মাহবুবউল আলম হানিফ: আওয়ামী লীগের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমাদের যদি দুর্বলতা থাকে তাহলে উদ্বিগ্নের শঙ্কা থাকে। যেহেতু এ সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন; যা অতীতে কোনো সরকার পারেনি। এতে জনগণের আস্থাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের যারা উন্নয়ন সহযোগী দেশ আছে, তারা এ দেশে আসবে, খোঁজখবর নিবে, অধিকতর বিনিয়োগ করবে, সেটার পরিবেশ আছে কিনা যাচাই করবে- এটাই স্বাভাবিক। তাতে কোনো সমস্যা নেই। এটির জন্য আওয়ামী লীগের শঙ্কাও নেই বরং আমরা স্বাগত জানাই।

যুগান্তর: আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন জোট হতে পারে কিনা?

মাহবুবউল আলম হানিফ: আওয়ামী লীগ পির-ফকিরের দল নয়, এ দেশে সবচেয়ে ধর্মনিরপেক্ষ দল। সেটা ধরেও রেখেছে। আওয়ামী লীগ সব ধর্ম-বর্ণ মানুষের দল। সেই ঐতিহ্য আছে, সেটা আওয়ামী লীগ ধারণ করে আসছে এবং এটাকে সব সময় লালন করে যাবে।

যুগান্তর: মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মাহবুবউল আলম হানিফ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

Share This Article


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে

নুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ: বিস্ফোরক তথ্য দিলেন সাফাদি

যে কারণে বাংলাদেশের নির্বাচনে আমেরিকার নাক গলানো উচিত নয়: ইন্ডিয়া টুডে’র নিবন্ধ

নোবেল জয়ী ইউনূস : একজন সাদা মানুষের কালো অধ্যায়

গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাঝে অনাস্থা তৈরিতে দায়ী যে দুই সংবাদ মোড়ল

সাংবাদিকতার নামে শিশুকে এক্সপ্লয়েট করা জঘন্য অপরাধ: ড. সেলিম মাহমুদ

দুবাইয়ে আরাভের অঢেল সম্পদের নেপথ্যে কারা

ড. ইউনুসের অর্থপাচার এবং আর্থিক দুর্নীতি ও অন্যান্য অপরাধের বিবরণ

খালেদার জায়গা নিতে চান ফখরুল

চমকে দেওয়া পর্যটন রেল

বাংলাদেশ নিজের শক্তিতে দাঁড়িয়েছে