হারাম থেকে বেঁচে থাকি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩২, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২১ মাঘ ১৪২৯

আমরা সবাই জান্নাতে যেতে চাই। কেউই জাহান্নামের বাসিন্দা হতে চাই না। জান্নাতে যেতে হলে আমাদের হারাম রিজিক ও অবৈধ উপার্জন থেকে বেঁচে থাকতে হবে। অবৈধ উপার্জনে অর্জিত টাকা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলে তা জান্নাতে যাওয়ার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

 

রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা তালাশ কর; যা হালাল তা গ্রহণ কর এবং যা হারাম তা বর্জন কর।’ (ইবনে মাজাহ) পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর জমিনে যা কিছু হালাল ও পবিত্র জিনিস আছে তা খাও এবং কোনো অবস্থায়ই হালাল-হারামের ব্যাপারে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না।’ (সুরা বাকারা) শয়তান সবস ময় মানুষের সামনে হারামকে সুশোভিত করে উপস্থাপন করে।

তাই আল্লাহ আমাদের এ আয়াতের মাধ্যমে সাবধান করে দিচ্ছেন যাতে আমরা তার ফাঁদে না পড়ি। আমরা মনে করি, অবৈধ উপার্জন ছাড়া বুঝি ভালোভাবে জীবন -যাপন করা যায় না। এ ধারণা ভুল। মনে রাখতে হবে, হারাম উপার্জনই জীবনের সুখশান্তি সবকিছু নষ্ট করে। মানুষ বিভিন্ন ধরনের বালামুসিবতে পড়ে। জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। আমরা কি একটুও চিন্তা করে দেখি না, সকালে একটি পাখি শূন্য পেটে তার নীড় থেকে বের হয়ে আবার সন্ধ্যায় ভরপেটে ফিরে আসে। সে আল্লাহর ওপর ভরসা করে।

পৃথিবীর সব জীবজন্তুর রিজিকের ব্যবস্থা কে করেন? মহান রব্বুল আলামিন। আমরা কেন এই রিজিকের ব্যাপারে আল্লাহর ওপর ভরসা করতে পারি না? আমরা যদি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে নিজের শ্রম দিয়ে চেষ্টা করি অবশ্যই আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম রিজিক দান করবেন। আল্লাহ বলেন, ‘এবং তিনি তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন যার উৎস সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই।’ (সুরা তালাক, আয়াত ৩) সুবহানাল্লাহ! আমাদের মনে রাখতে হবে, রিজিক শুধু আহারসামগ্রী বা খাদ্য নয়। আমরা যা খাই, পরিধান করি এবং ভোগ করি সবই রিজিকের অন্তর্ভুক্ত।

রিজিকের প্রধান আইটেম হলো খাদ্য। এ খাদ্য কি আমরা হালাল খাচ্ছি? আল্লাহ আমাদের জন্য মদ, শূকরের মাংস, রক্ত এবং আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কারও নামে জবাইকৃত পশুর মাংস হারাম করেছেন।

রুটি, ভাত, ডাল, মাছ, তরকারি হালাল; কিন্তু তা যদি অবৈধ উপার্জনের টাকা দিয়ে কিনে খাওয়া হয় তাহলে তা হবে হারাম।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের গৃহপালিত সব পশু হালাল, কেবল সেসব ছাড়া যা বিবরণসহ তোমাদের পড়ে শোনানো হচ্ছে।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত ১) ‘তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে এবং তার খাবার তোমাদের জন্য ও সমুদ্রের পর্যটকদের জন্য উৎকৃষ্ট সম্পদ।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত ৯৬)

সুতরাং হালাল হারাম মেনে বৈধ উপার্জন দ্বারা আমাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হবে। হারামকে হালাল বানিয়ে খাওয়াও হারাম। আজকাল আমরা এ চেষ্টাও করি। ঘুষকে বকশিশ বা উপহার বানিয়ে গ্রহণ করি; যা বৈধ নয়। এ ঘুষের টাকা দিয়ে আমরা বিত্তবান হই। আয়েশি-জীবন যাপন করি; যা কখনো হালাল নয়।

রসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঘুষদাতা ও ঘুষখোর উভয়েই দোজখের আগুনে জ্বলবে।’ (তাবারানি) হালাল হারাম একেবারে স্পষ্ট। হত্যা করা হারাম। জিনা, ব্যভিচার হারাম। ধর্ষণ হারাম। সুতরাং সব ধরনের নিষিদ্ধ কাজ যা কোরআন ও হাদিসে এসেছে তা সবই হারাম।

এ হারাম থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। জীবন চলার প্রতিটি পদক্ষেপে ছড়িয়ে রয়েছে শয়তানের প্ররোচনা। তা থেকে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচাতে হবে। তা না হলে যত নেক আমল করি না কেন, তা পরকালে কোনো কাজে আসবে না। হারাম অন্তরকে নষ্ট করে ফেলে। তাই হারাম থেকে নিজে বাঁচি এবং পরিবার ও সমাজকে বাঁচাই। আল্লাহর নেক বান্দা হয়ে জীবন গড়ি।

Share This Article