হাতিরঝিলে বসছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৮০ পিয়ার

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:৪৬, সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১৬ মাঘ ১৪২৯

ঢাকার দৃষ্টিনন্দন জলাধারগুলোর একটি হাতিরঝিল। শহরের পানি নিষ্কাশনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে এ জলাধার। হাতিরঝিলের একটি অংশের ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এজন্য ঝিলের মধ্যে বসবে ৮০টি পিয়ার বা খুঁটি। এতে জলাধারটির স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানিপ্রবাহ এবং নৌ চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এর নকশাকারকরা। যদিও প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিয়ারের কারণে হাতিরঝিলের পানিপ্রবাহে কোনো সমস্যা হবে না। আর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এ প্রকল্পের মাধ্যমে সাজানো হবে বেগুনবাড়ী খাল এলাকা।

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে থেকে বনানী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যুক্ত হবে ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’। প্রায় ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে যানজট এড়িয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক হয়ে সহজেই চলে যাওয়া যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। চাইলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বের হয়ে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টেও যাওয়া যাবে। এজন্য ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে ৩১টি র্যাম্প বা সংযোগ সড়ক। এর মধ্যে একটি র্যাম্প হবে এফডিসি মোড় থেকে পলাশী পর্যন্ত। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে এ র্যাম্পে ওঠা ও নামার পথের জন্য হাতিরঝিলে ৮০টি পিয়ার তৈরি করা হবে।

নকশা অনুযায়ী, হাতিরঝিল-পলাশী র্যাম্পের একটি অংশ এফডিসি মোড় থেকে বেগুনবাড়ী খাল হয়ে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পেছন দিক দিয়ে পলাশীর দিকে যাবে। র্যাম্পটিতে ওঠা ও নামার জন্য থাকবে দুটি পথ। চট্টগ্রাম মহাসড়ক বা যাত্রাবাড়ী থেকে আসা যানবাহন এটি ব্যবহার করে ইস্টার্ন প্লাজা, পলাশী হয়ে পুরনো ঢাকার দিকে চলে যেতে পারবে। একইভাবে এসব এলাকা থেকে আসা যানবাহনও প্রবেশ করতে পারবে এক্সপ্রেসওয়েতে। র্যাম্পটিতে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য একটি টোল প্লাজাও তৈরি করা হবে। বিজিএমইএ ভবনটি যেখানে ছিল, ঠিক সেখানেই হবে এ টোল প্লাজা। অন্যদিকে কারওয়ান বাজার গোল চত্বর থেকেও এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার জন্য থাকবে র্যাম্প। আর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে র্যাম্প এসে নামবে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে। হাতিরঝিলে ৮০টি পিয়ার বসিয়ে তৈরি করা হবে এসব অবকাঠামো।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ পিয়ারগুলো স্বাভাবিক পানিপ্রবাহকে বিঘ্নিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন হাতিরঝিল প্রকল্পের মূল সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেকোনো নদীতে যদি আপনি সেতু করতে চান, সেই সেতুর পিলারের কারণে নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। আমি নিশ্চয় খুশি হতাম, হাতিরঝিলে যদি কোনো পিয়ার না পড়ত। হাতিরঝিল থেকে পলাশীর দিকে যে র্যাম্পটা যাচ্ছে, পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সেটার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। এর সুফলভোগী মানুষের সংখ্যাও অনেক। এজন্য আমরা এ বিষয়টা নিয়ে কথা বলিনি।’ র্যাম্পটির সুবিধা-অসুবিধা দুই-ই আছে বলে জানান তিনি।

বুয়েটেরই আরেক অধ্যাপক ড. সামছুল হক, যিনি এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটিতে পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অবশ্য বলছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এসব পিয়ার হাতিরঝিলের পানিপ্রবাহে বাধা হবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেখানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিয়ারগুলো বসবে, সেটা মূল হাতিরঝিলের অংশ না। লেকের মধ্যে পিয়ার কোনো সমস্যা নয়। পিয়ারের কারণে পানিপ্রবাহ বিঘ্নিত হবে না। বিস্তীর্ণ হাতিরঝিলে কোনো অসুবিধা হবে না। অনেকেই এটা নিয়ে ভুল বার্তা দিচ্ছে। পৃথিবীর অনেক উন্নত শহরেও লেকের ওপরে পিয়ার তৈরি করে অবকাঠামো করা হয়েছে।’

হাতিরঝিলের অন্যতম নকশাকার স্থপতি ইকবাল হাবীব। পরবর্তী সময়ে তিনি সম্পৃক্ত হয়েছেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হাতিরঝিল-পলাশী র্যাম্পের নকশার কাজেও। র্যাম্পটি তৈরির সময় প্রযুক্তিবান্ধবতার বিষয়গুলো মাথায় রাখার আহ্বান জানিয়ে এ নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা পুরনো ঢাকা থেকে শুরু করে ধানমন্ডি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হলে এক্সপ্রেসওয়ের এ র্যাম্পটির কোনো বিকল্প নেই। বকশীবাজার থেকে পান্থপথ পর্যন্ত এলাকার মানুষ এ র্যাম্পের সুবিধা পাবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুরুতে এ র্যাম্পের যে গতিপথ ছিল, তা হওয়ার কথা ছিল লেকের মাঝখান দিয়ে। পরে নকশাটি পর্যালোচনার জন্য প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যার, অধ্যাপক সামছুল হক ও আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। আমরা সেই গতিপথ কিছুটা লেকের পাড় ঘেঁষে সরিয়ে আনার পরামর্শ দিই। আমাদের পরামর্শ মেনেই এটির নকশা করা হয়েছে। জামিলুর রেজা স্যারের নেতৃত্বে আমরা আরো পরামর্শ দিয়েছিলাম, ওয়াকওয়ে, বাগান, সাইকেল লেনের মতো অবকাঠামো তৈরি করে হাতিরঝিলের ওই অংশের সৌন্দর্যবর্ধন করার।’ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মাধ্যমেই এসব অবকাঠামো তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। খরচ হচ্ছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। তিন ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে নির্মাণকাজ। প্রথম ধাপ বিমানবন্দর-বনানী অংশের অগ্রগতি ৯২ দশমিক ১৫ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপ বনানী-মগবাজার অংশের অগ্রগতি ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। শেষ ধাপ মগবাজার-কুতুবখালী অংশের অগ্রগতি ২ শতাংশ।

Share This Article


সাড়ে ৩ লাখ প্রার্থীর শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আজ

বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাট খাতে চীনা উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহবান মন্ত্রীর

১৩ অঞ্চলের নদীবন্দরে এক নম্বর সংকেত

বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক

শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ইসলাম প্রচারে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে: হুইপ ইকবালুর রহিম

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের- ফাইল ফটো

জিয়াউর রহমান সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন ক‌রে: ওবায়দুল কা‌দের

একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন

কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফরে গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে অনেক দূর এগিয়েছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দায়িত্ব নিয়েই ভিসি বললেন `দুর্নীতি করবো না, প্রশ্রয়ও দেব না'

তিন ঘণ্টায় রেলের ১৫ হাজার টিকিট বিক্রি