সুন্দরবনের লোকালয়ে দুই বাঘের গর্জন, আতঙ্কে গ্রামবাসী

জনসাধারণকে সচেতন করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে করা হয় মাইকিং। বন বিভাগসহ সুন্দরবন সুরক্ষায় নিয়োজিত কমিউনিটি প্রেট্রোল গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যরা এলাকায় টহল দিতে শুরু করে। এরমধ্যে রাত ২টার দিকে দুটি বাঘ একসাথে গর্জন শুরু করলে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি রাতে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদী পার হয়ে দু'টি বাঘ বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামে ঢুকে পড়ে। বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে সুন্দরবন বিভাগের সতর্ক পাহারার মধ্যে দু’দিন পর বাঘ দু’টি লোকালয়ে জানমালের কোন ক্ষতি না করে তাদের আবাসস্থল সুন্দরবনে ফিরে যায়।

চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারার স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, রবিবার রাত ৮টার দিকে মোড়েগলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামের লোকজন দু’টি বাঘের গর্জন শুনতে পান। এ খবর জানতে পেরে দ্রুত বনরক্ষীরা পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামে গিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে। এছাড়াও রাতে লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে এলাকায় মাইকিং করা হয়।

সুন্দরবনের ভরাট হয়ে যাওয়া ভোলা নদী তীরবর্তী লোকালয় হচ্ছে পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রাম। আমরা অনুমান করছি, বাঘ দু’টি লোকালয়ে ঢোকেনি। সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারার স্টেশন এলাকার ২৭ নম্বার কম্পার্টমেন্টের মিস্ত্রীর ছিলা ও সুধীর ছিলার লোকালয়ের খুবই কাছে রয়েছে বাঘ দুটি।

এর আগে গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ২৭ নম্বার কম্পার্টমেন্টের মিস্ত্রীর ছিলা এলাকার খালে মাছ ধরার সময় বাঘের আক্রমণে গুরুতর আহত হয় অনুকূল গাইন (৩৫) নামে এক জেলে। ওই জেলেকে অন্য জেলেরা বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। এ ঘটনার পর একই এলাকার সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে এক সাথে দুটি বাঘের গর্জনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভোলা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে সুন্দরবনের বাঘসহ বণ্যপ্রাণীরা সহজেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।

বাগেরহোটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, রবিবার রাতে সুন্দরবনের ২৭ নম্বার কম্পার্টমেন্টের লোকালয়ের লোকজন দুটি বাঘের গর্জন শুনতে পাওয়ার পর পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। লোকালয়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে বাঘ দুটি লোকালয়ে ঢুকে পড়েনি। তবে খুব কাছাকাছি রয়েছে।

লোকালয়ে যাতে ঢুকে পড়তে না পারে সেজন্য বনরক্ষী ও সিপিজি সদস্যরা সার্বক্ষণিক এলাকায় টহল দিচ্ছে। তবে লোকালয়ে ঢুকে পড়লে লোকজন যাতে বাঘকে পিটিয়ে মেরে না ফেলে সেজন্য সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।