ভিপি নূরে অস্বস্তি, গণতন্ত্র মঞ্চের আন্দোলন সফল হবে কি ?
বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ১০ দফা দাবি নিয়ে সারা দেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ আন্দোলন সফল করতে সেদিন সরকারবিবেরাধী সব রাজনৈতিক দলেরই অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।তবে প্রশ্ন উঠেছে ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূরের দল গণ অধিকার পরিষদকে নিয়ে।বিশেষ করে নূরের সাম্প্রতিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দ্বিমত পোষণ করেছেন আন্দোলনে যুক্ত হতে যাওয়া স্ব স্ব দলের নেতারা।
গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বিএনপিসহ সরকারবিরোধী সব দল ও জোট তিনটি কর্মসূচি পালন করে। তিনটি কর্মসূচির কোনোটিতেই গণ অধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়া বা নুরুল হক নূর উপস্থিত ছিলেন না। এর মধ্যে গণ অধিকার পরিষদ দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েও ১৬ জানুয়ারির বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়নি।এতে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
অন্যদিকে, ১১ জানুয়ারির ‘গণ-অবস্থান’ কর্মসূচি ঘিরেও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে গণ অধিকার পরিষদের মনোমালিন্য দৃশ্যমান হয়। এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে চেয়েছিলেন গণ অধিকারের সদস্যসচিব নুরুল হক।বিদেশ থেকে ঢাকায় পৌঁছেই তিনি কর্মসূচিতে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কর্মসূচিস্থলে তাঁর উপস্থিত হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে তা শেষ করা হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, সবাই যখন একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছে, সে সময় নিরুদ্দেশ ভিপি নূরের গণ অধিকার পরিষদ। তারা একসাথে আন্দোলনে নামার কথা বললেও কর্মসূচিতে সক্রিয় নয়।এভাবে আন্দোলন হয়না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নূরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। তার মধ্যে একটা নেতা নেতা ভাব চলে এসেছে। কাউকেই মান্য করছেন না। কোন কিছু তোয়াক্কা না করে যখন যা খুশি তাই বলছেন।একদিকে ইসরাইলী নেতা লিকুদ সাফাদির মতো বক্তির সঙ্গেও বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে আবার অন্যদিকে তিনি জামায়াতের সাথেও সখ্যতা বজায় রেখে চলছেন।এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।আদর্শিক ঐক্য বিহীন যুগপৎ আন্দোলন সফল হবার দৃষ্টান্ত খুব কমই রয়েছে।তাই সামনের কর্মসূচীগুলির সফলতা নিয়ে আমি সন্দীহান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ আগস্ট সাতটি দল ও সংগঠন নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ গঠিত হয়। কিন্তু পাঁচ মাস যেতে না যেতেই নেতৃত্বের বিরোধ থেকে অসন্তোষের কারণে গণতন্ত্র মঞ্চে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়।ফলে যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচী বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে হচ্ছে নেতৃবৃন্দকে।
সূত্রমতে ৪ ফেব্রুয়ারির আন্দোলনে নূরের দল গণ অধিকার পরিষদ যুক্ত হলে অন্যান্য দল যুক্ত হবেন কিনা তা নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা, কেননা নূরের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে তারা বিব্রত।কিন্তু নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির প্রতি আস্থাশীল না থাকায় নুরকে পুরোপুরি বাদ দেয়ার সাহসও পাচ্ছেননা তারা।এমন টানাপোড়েন,সন্দেহ ও শঙ্কায় আদতে তাদের কর্মসূচি ব্যর্থ হবার প্রবল সম্ভাবনার কথাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।