ফাঁসির মামলা নিষ্পত্তির রেকর্ড

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:৪৫, রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮ মাঘ ১৪২৯

বর্তমানে দেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার মিলিয়ে ৬৮টি কারাগারের কনডেম সেলে ফাঁসির আসামির সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।

দেশের ইতিহাসে প্রথমবার গত বছর এক দিনেই ১২টি ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড অনুমোদন) মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে হাই কোর্টে। অবকাশকালীন ছুটিতে গঠন করা ১১টি বিশেষ বেঞ্চ ৩০ মার্চ এসব রায় দেন। শুধু ওই এক দিনের রেকর্ড নয়, বিগত বছরে সর্বোচ্চ ১৫৫টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির রেকর্ডও হয়েছে হাই কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে মৃত্যুদন্ড অনুমোদন সংক্রান্ত ১৯৫টি মামলার নিবন্ধনও আরেকটি রেকর্ড। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানিয়েছেন, ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েও আকাক্সক্ষা অনুযায়ী জট কমানো যাচ্ছে না। গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচারাধীন ডেথ রেফারেন্স মামলা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৫টি। বর্তমানে ২০১৭ সালে নিবন্ধনকৃত ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি চলছে বলে সূত্রটি জানায়। বর্তমানে দেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার মিলিয়ে ৬৮টি কারাগারের কনডেম সেলে ফাঁসির আসামির সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা বলছেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব নিয়েই পুরনো মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দেন। ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তিতে বিশেষ বেঞ্চ গঠন তাঁর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রধান বিচারপতির নানা ধরনের পদক্ষেপের কারণে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তিতে গতি বেড়েছে। তবে ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তিতে হাই কোর্টে আরও বেঞ্চ গঠন করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী কোনো মামলায় নিম্ন আদালত থেকে দেওয়া মৃত্যুদন্ড হাই কোর্টের অনুমোদন ছাড়া কার্যকর করার সুযোগ নেই। এ কারণে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে এমন মামলার নথিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাই কোর্টে। এসব মামলা হাই কোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নিবন্ধন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩ সালে হাই কোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা নিবন্ধন হয় ৬৩টি। আর নিষ্পত্তি হয়েছে ১০২টি মামলা। ২০১৪ সালে ৯২টি ডেথ রেফারেন্স নিবন্ধন হয়, নিষ্পত্তি ১৩৫টি। ২০১৫ সালে নিবন্ধন ১১৪, নিষ্পত্তি মাত্র ৫৮টি। ২০১৬ সালে নিবন্ধন ১৬১, নিষ্পত্তি ৪৫ মামলা। ২০১৭ সালে ১৭১টি মামলা নিবন্ধনের বিপরীতে নিষ্পত্তি হয় ৬৬টি মামলা। ২০১৮ সালে ৮৩টি মামলা নিষ্পত্তি হলেও ওই বছর নিবন্ধন হয় ১৫৪টি মামলা। ১০০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ২০১৯ সালে, নিবন্ধন হয় ১৬৪টি মামলা। ২০২০ সালে ১২৩টি মামলা নিবন্ধনের বিপরীতে নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫টি। ২০২১ সালে মামলা নিষ্পত্তি হয় ৯০টি, নিবন্ধন হয় ১৪৮টি মামলা। ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ১৯৫ ডেথ রেফারেন্স মামলা নিবন্ধন হয়েছে হাই কোর্টে। আর নিষ্পত্তিও সর্বোচ্চ ১৫৫ মামলা। বিগত বছর মার্চ এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর অবকাশকালীন ছুটিতে গঠন করা ২১টি বিশেষ বেঞ্চে ৬৪টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শাখা সূত্র জানায়, ডেথ রেফারেন্স শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করতে হয়, যেখানে মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের বক্তব্য ও বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলার তথ্যাদি সন্নিবেশিত থাকে। সবকিছু পাঠানো হয় সরকারি ছাপাখানায় (বিজি প্রেস)। সেখান থেকে বই আকারে প্রস্তুত হয়ে পেপারবুক হিসেবে আসার পর বিচারের জন্য পাঠানো হয় হাই কোর্ট বেঞ্চে। এ পেপারবুক তৈরিতে বিলম্ব হওয়াও ডেথ রেফারেন্স মামলা ঝুলে থাকার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া মামলা অনুপাতে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের অভাব তো রয়েছেই।
জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকেই তিনি পুরনো মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দিচ্ছেন। তার উদ্যোগের কারণেই গত বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হাই কোর্টের সাবেক বিচারপতি ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কনডেম সেলে যেসব আসামি বন্দি থাকেন তারা কেমন অবস্থায় থাকেন তা সবারই জানা। সেটা কোনোভাবেই সুখকর নয়। এ অবস্থায় মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের মামলা নিষ্পত্তিতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁর এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে দ্রুতই ডেথ রেফারেন্স মামলার জট কেটে যাবে। তিনি আরও বলেন, বেঞ্চ আরও বাড়ানো গেলে এ ধরনের মামলার চাপ কমে আসবে।

Share This Article


হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

বিচার শুরু রাসেল-শামীমার, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

দুর্নীতি মামলায় কারাগারে মেজর মান্নান

ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর

আড়াই বছরের মেয়েকে হত্যা: প্রেমিকসহ মায়ের যাবজ্জীবন

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ছে, বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী

হলমার্কের তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন

আজ হলমার্কের দুর্নীতির মামলার রায়

তানভীর-জেসমিনসহ হলমার্কের ১৮ জনের রায় আজ

সগিরা মোর্শেদ হত্যা: দুইজনের যাবজ্জীবন, খালাস ৩

যে আইনের ধারাগুলোর স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন ড. ইউনুস

রোজায় খোলা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : আপিল বিভাগ