ডোনাল্ড লুর সফর নিয়ে বিএনপিতে অস্বস্তি
ডোনাল্ড লুর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করতে কূটনৈতিক উইং থেকে চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকমান্ডের গাফিলতির কারণে ইতিবাচক ফল আসেনি। দলীয় মহাসচিব হিসেবে লুর সাথে যোগাযোগ করার কথা ছিল মির্জা ফখরুল এবং পররাষ্ট্র বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রুমিন ফারহানার। কিন্তু তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
কয়েক দিন ধরে দেশের রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দুবিন্দুতে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর। গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দুইদিনের জন্য বাংলাদেশ সফরে আসেন লু।
তার সফরের আগে গত ৯ জানুয়ারি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্তি পান। এর মধ্যে লুর সফর নিয়ে মাঠের বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে এক ধরনের প্রত্যাশা তৈরি হয়। বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধারণা ছিল, সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সফরকালে লু বড় ধরনের একটা বার্তা দেবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টাসহ দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় নিয়ে বৈঠক করেন লু। তবে বিএনপির সঙ্গে কোনো বৈঠক হয়নি তার। লুর সফরকালে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস হাসপাতালে ভর্তি হন। এ নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। চলছে তীব্র সমালোচনা ও দোষারোপ।
১৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ ত্যাগের পর লুর সফর নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে এক ধরনের অস্বস্তি দেখা যায়। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই লুর সফরের বিষয়টি আলোচনায় আনছেন নেতা-কর্মীরা। তারা জানতে চান ডোনাল্ড লুর সঙ্গে কেন বিএনপির বৈঠক হলো না।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘আমার জানা মতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তির কথা ছিল। কিন্তু লু বাংলাদেশ সফরে আসার পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। মহাসচিব যে আচমকা এমন হঠকারি সিদ্ধান্ত নেবেন তা জানতাম না। তার এমন অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের এক সদস্য জানান, ডোনাল্ড লুর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করতে কূটনৈতিক উইং থেকে চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকমান্ডের গাফিলতির কারণে ইতিবাচক ফল আসেনি। দলীয় মহাসচিব হিসেবে লুর সাথে যোগাযোগ করার কথা ছিল মির্জা ফখরুল এবং পররাষ্ট্র বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রুমিন ফারহানার। কিন্তু তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন, যদিও রুমিন ফারহানা এ বিষয়ে তার ফেসবুক পোস্টে কৈফিয়ত দেয়ার চেষ্টা করেছেন , কিন্তু এতে সন্তুষ্ট নয় কর্মীরা।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির সঙ্গে লুর বৈঠক না হওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মনোবল নিম্নমুখী। মির্জা ফখরুল কেন লুর সফরের দিন হাসপাতালে ভর্তি হলেন আর অন্য নীতি নির্ধারকরা কেন বৈঠকের উদ্যোগ নিলেন না বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি উঠেছে দলটির বিভিন্ন মহলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।