আ.লীগ প্রতিটি সম্মেলনেই জাতিকে কিছু না কিছু দিয়েছে : খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:১৫, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮ পৌষ ১৪২৯

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ২৪ ডিসেম্বর (শনিবার) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রত্যয়’। এই সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ব্যাপক আগ্রহ এবং প্রত্যাশা রয়েছে। এ নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের পক্ষ থেকে দলটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয়। দিনাজপুর-২ (বোচাগঞ্জ-বিরল) আসন থেকে পরপর তিনবার নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বর্তমানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।


 

বাংলা ট্রিবিউন: শীতের মাঝে বিরাজ করছে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উষ্ণতা। এ মুহূর্তে আপনার ব্যস্ততা কেমন?

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: সব মিলিয়ে ভালো আছি, আল্লাহ ভালোই রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরীখালিদ মাহমুদ চৌধুরীবাংলা ট্রিবিউন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবারের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলন নিয়ে আপনার প্রত্যাশা জানতে চাই।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন মানে তো রাজনীতির অনেক বড় খবর। এই দলের ওপরে মানুষের রাগ আছে, অভিমান আছে, প্রত্যাশাও আছে। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে এমনটা নেই। কারণ, মানুষ মনে করে আওয়ামী লীগই কেবল তাদের জন্য কাজ করে, অতীতেও করেছে। সে জন্যই এই সম্মেলন নিয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ। প্রতিটি সম্মেলনেই জাতিকে কিছু না কিছু দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০১৯ সালের সবশেষ সম্মেলনের পরপরই করোনা মহামারির সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সম্মেলনে দেশমাতৃকার জন্য কাজ করার যে শপথ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ, সেই কাজটি করোনাকালে করেছে দলের নেতাকর্মীরা। অন্য কোনও রাজনৈতিক দল এ কাজ করেনি, নেতারাও করেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা মোকাবিলায় কাজ করে গেছেন। আওয়ামী লীগের কথার সঙ্গে, অঙ্গীকারের সঙ্গে কাজের একটা সামঞ্জস্য পাওয়া যায়, তা থেকেই বোঝা যায়—এটি গণমানুষের দল। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের অঙ্গীকার সঠিকভাবে পালন করে চলেছেন। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও একটা রাজনৈতিক দল নিজস্ব কর্মকাণ্ড থেকে হারিয়ে যায়নি। আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলন সেটা প্রমাণ করে। অনেক দল করোনাসহ নানা অজুহাতে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের আড়াল করে রেখেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করেছে। সেই সঙ্গে দলের সাংগঠনিক চর্চা, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা চালিয়ে গেছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরীখালিদ মাহমুদ চৌধুরীবাংলা ট্রিবিউন: এবারের সম্মেলনে আপনার প্রত্যাশা কী?

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে সাধারণ মানুষের মতো আমাদেরও অনেক প্রত্যাশা আছে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার করেছেন, ডেফিনিটলি এই সম্মেলন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই দিকনির্দেশনা দেবেন। সেই আলোকেই দেশমাতৃকার জন্য আওয়ামী লীগ আগামী দিনে পরিচালিত হবে।

বাংলা ট্রিবিউন:  আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কাজের মূল্যায়ন কীভাবে করবেন?

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ, ঐতিহ্যবাহী এবং ধারাবাহিক রাজনৈতিক দল। অতীতের কমিটিগুলোর মতো এই কমিটিও অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করেছে। সরকার যেমন সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছে, আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিও তেমন সফলতার সঙ্গে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এমন একটা রাজনৈতিক দল— যেখানে কয়েকশ’ কেন্দ্রীয় কমিটি করার মতো নেতৃত্ব রয়েছে। যেটা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের মধ্যে পাওয়া যাবে না। কাজেই আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী পরিপক্ব । এখানে কাউকে খাটো করার বা বড় করার কোনও বিষয় নেই। আমরা আওয়ামী লীগের আদর্শ এবং নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস রেখেই চলি সবসময়। যে দলের আদর্শ এবং নেতৃত্ব ঠিক থাকে, তাদের আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয় না।

নিজের দফতরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীনিজের দফতরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীবাংলা ট্রিবিউন: আপনার বাবা আব্দুর রউফ চৌধুরী আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। আপনি বর্তমানে দলের পদে না থাকলেও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কীভাবে মূল্যায়ন করবেন বিষয়টি?

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: আমরা রাজনীতি করি একটা লক্ষ্য নিয়ে, দেশের জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করাই আমাদের পথচলা। রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় আমরা দুই জনই দলীয় রাজনীতির সঙ্গে, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের যে লক্ষ্য দেশ পরিচালনার, এই মহান দায়িত্ব আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। নেত্রী সবসময় বলেন, ‘ব্যক্তির থেকে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়।’ সবচেয়ে বড় কাজটার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আমাকে সম্পৃক্ত করেছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা সেই কাজটি সততার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বাংলা ট্রিবিউন: মন্ত্রণালয়ের কাজ করতে গিয়ে কোনও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা?

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাটাই হচ্ছে নেতৃত্বের বড়দিক। বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই নেতৃত্ব, যার সাহস ও দিকনির্দেশনার কারণে আমাদের কখনও পেছনে তাকাতে হয় না। এ রকম একটা সাহসী এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মতো নেতৃত্ব যখন থাকে, তখন আমাদের কাজগুলো এমনিতেই হালকা হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীপ্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীবাংলা ট্রিবিউন: রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছোটবেলায় আপনার চিন্তা—রাজনীতিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রেরণা এবং এখন আপনাকে কোন বিষয়টি শক্তি জোগায়?

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: আমার বাবা কখনও বিখ্যাত হতে চাননি, বড় কিছু হতে চাননি। তিনি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করেছেন, করতে করতে কেন্দ্রীয় নেতায় পরিণত হয়েছেন। কমিটমেন্ট ছিল, দেশপ্রেম ছিল, দলের প্রতি ও নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য ছিল। পারিবারিকভাবে অনেক প্রতিকূলতা আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের পরিবারের ওপর অনেক নির্যাতন কয়েছে। পরিবারের সদস্যরা শহীদ হয়েছেন। কিন্তু এগুলোকে কখনও সামনে নিয়ে এসে আমার বাবা ফায়দা লুটতে চাননি। তিনি তার কাজটি করে গেছেন। সেই কাজের স্বীকৃতি দল ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে দিয়েছেন। একই ধারাবাহিকতায় আমরা কাজ করেছি। কোনও কিছু হবো, এটা কখনও চিন্তা করিনি। ৭৫ পরবর্তী বাবাকে জিয়াউর রহমানের নির্যাতনের শিকার হতে দেখেছি। আমাদের পরিবারের সঙ্গে ওঠাবসা করা রাজনীতিকদেরও নির্যাতন করা হয়েছে। কারাবরণ করতে হয়েছে। তখন থেকে কিন্তু রাজনৈতিক একটা জিঘাংসা তৈরি হয়েছে। তার আগে তো পারিবারিকভাবে একটা রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ছিলই। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসেন, তারপর থেকে এটা আরও বেড়ে গেলো। এই পথ চলতে চলতেই আজকে এই জায়গায় এসেছি। আসলে কোনও কিছুকে ঠিক করে চলা নয়, এই জায়গায় যাবো, এটা হবো...। এগুলো আগেও ভাবিনি, এখনও ভাবি না। এখনও যে দলের জন্য কাজ করতে পারছি, সেটাই গর্বের এবং অহংকারের বিষয়।

আ.লীগ প্রতিটি সম্মেলনেই জাতিকে কিছু না কিছু দিয়েছেআর ছোটবেলার কথা বললে, আমি যখন স্কুলে পড়ি, সেই সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসেন। সেই সময় সমগ্র বাংলাদেশ তার প্রতি যে উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে দেখেছি, তার প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা, সেটি কিন্তু আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তারপর আমাদের আর কেউ থামিয়ে রাখতে পারেনি। তার নেতৃত্বই আমার সরাসরি রাজনীতির উৎসাহ, চলার পথের পাথেয়। এখনও নির্ভার শক্তি জুগিয়ে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলা ট্রিবিউন: এত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভালো থাকবেন সবসময়।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: বাংলা ট্রিবিউনকে এবং আপনাকেও ধন্যবাদ। শুভ কামনা থাকলো।

Share This Article


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে

নুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ: বিস্ফোরক তথ্য দিলেন সাফাদি

যে কারণে বাংলাদেশের নির্বাচনে আমেরিকার নাক গলানো উচিত নয়: ইন্ডিয়া টুডে’র নিবন্ধ

নোবেল জয়ী ইউনূস : একজন সাদা মানুষের কালো অধ্যায়

গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাঝে অনাস্থা তৈরিতে দায়ী যে দুই সংবাদ মোড়ল

সাংবাদিকতার নামে শিশুকে এক্সপ্লয়েট করা জঘন্য অপরাধ: ড. সেলিম মাহমুদ

দুবাইয়ে আরাভের অঢেল সম্পদের নেপথ্যে কারা

ড. ইউনুসের অর্থপাচার এবং আর্থিক দুর্নীতি ও অন্যান্য অপরাধের বিবরণ

খালেদার জায়গা নিতে চান ফখরুল

চমকে দেওয়া পর্যটন রেল

অতি বাম অতি ডানগুলো সব এক হয়েছে: হানিফ

বাংলাদেশ নিজের শক্তিতে দাঁড়িয়েছে