১০ ডিসেম্বর ইস্যুতে বিএনপিতে দ্বন্দ্ব: দ্বিধাবিভক্ত শীর্ষ নেতারা!
১০ ডিসেম্বর সত্যিকার অর্থেই কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে আছেন বিএনপির মাঠ কর্মীরা।কারণ এই সমাবেশের উদ্দেশ্য ও ফলাফল নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
খালেদা জিয়া কিভাবে সমাবেশে আসবেন?
১০ তারিখের সমাবেশের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার নির্দেশে। এমন ঘোষণাকে বাড়াবাড়ি বলছেন একাংশের নেতারা। তাদের মতে এমন ঘোষণা সরকারকে আরো আগ্রাসী করে তুলেছে, যার ফল ভুগতে হবে নেতাকর্মীদের।
এছাড়া সেদিন যদি সত্যিই খালেদা জিয়ার কথায় দেশ না চলে বা এমন।পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেটা বিএনপির ইমেজের মারাত্মক ক্ষতি করবে। তাই এমন ঘোষণার পর বিএনপিকে আগ্রাসী হওয়া ছাড়া উপায় নেই। যারা এমন ঘোষণা দিয়েছেন তারা বিএনপিকে এমন উভয় সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন বলে মনে করছেন একাংশের নেতারা।
সমাবেশ স্থল কোথায় হবে?
সরকার তথা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই বলা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে। বিএনপির একটি পক্ষের মত সেখানেই সমাবেশ করা। কারন, অনুমতি দেয়া আছে এমন স্থানে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনও এ্যকশনে যেতে পারবে না।
কিন্তু বিএনপির একটি পক্ষ পল্টনে সমাবেশ করার জন্য চাপাচাপি করছে। যদি পল্টনে জোরপূর্বক সমাবেশ করা হয়, তাহলে সেটি হবে অবৈধ এবং এর ফলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে যে কোনও এ্যকশান নেয়ার আইনি বৈধতা পাবে। এতে মূল সমাবেশটাই পন্ড হবে বলে মনে করছেন অনেক নেতা।
সবচেয়ে বড় সমস্যায় আছেন বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা এখনও নিশ্চিত নন সমাবেশ আসলে কোথায় হচ্ছে।
হেফাজতের মতো বসে পড়বে কি?
ইতিমধ্যে বিএনপির হাই কমান্ড থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সমাবেশ শেষে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সমাবেশস্থল ছেড়ে না যেতে। যেমনটি হেফাজতের নেতারা শাপলা চত্ত্বরে চেষ্টা করেছিলেন। অনেক নেতার মতে, তেমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা গেলে সরকারের ওপর কঠিন চাপ এমনকি পদত্যাগেও বাধ্য করা যাবে।
কিন্তু এর বিরোধীতা করেছেন বিএনপির একটি বড় অংশ।কারন হেফাজতে ইসলামের পরিনতি তারা দেখেছেন।আজ তাদের প্রভাব,এমনকি সাংগঠনিকভাবে অস্তিত্ব নেই বললেই চলে।সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে শাপলা চত্বরে বসে পরেছিলো তারা।তাই হেফাজতের মত ভুল করলে পরিনতি যে হেফাজতের মতোই হবে এমনটা আগে থেকেই সাবধান করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।আর এই হুমকিকে আমলে নিয়ে রাজপথে বসে পড়ার পকরিকল্পনাকে হঠকারী সিদ্ধান্ত মনে করে এর বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
সূত্রমতে বিষয়গুলি নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।ফলে এখন পর্যন্ত ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের পুর্ণাঙ্গা সূচিই ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। আর সে অনুযায়ী কোনও প্রস্তুতিও নিতে পারেননি কর্মীরা।তবে শেষ দিকে সিদ্ধান্ত দিলে সেটি সফলতা বলে আনবে না, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।