করোনার টিকাদানে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম, নষ্ট হয়নি কোনও টিকা!
- টিকাদানে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ও বিশ্বে পঞ্চম
- ৯৫ শতাংশ শিশু দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে
- টিকা নষ্ট বা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি
সারা বিশ্বে যে পাঁচটি দেশ প্রথম টিকার ব্যাপারে পরিকল্পনা করেছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। টিকাদানের হারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম এবং সারা বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ৯৮ শতাংশ প্রথম ডোজ এবং ৯৫ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে বলে ১ ডিসেম্বর দৈনিক দৈনিক প্রথম আলোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন জাতীয় টিকা প্রয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হক।
এ সময় তিনি জানান, টিকা সংগ্রহ ও টিকাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফলতার নেপথ্যের কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২০ সালের ৪ জুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্বে আয়োজিত প্রথম ভ্যাকসিন সামিটে যোগদান করে টিকাকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শুরু থেকেই তিনি করোনার টিকার ক্ষেত্রে উদ্যোগী ছিলেন।
টিকাদান প্রসঙ্গে শামসুল হক জানান, প্রথমে বয়স্কদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অনুমিত হিসাব ছিল ১২ কোটি মানুষের জন্য ২৪ কোটি টিকা লাগবে। শুরু থেকেই করোনা টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের সঙ্গে যুক্ত ছিল বাংলাদেশ। তারা ৬ কোটি ৪০ লাখ টিকা বিনা মূল্যে দেয়ার পাশাপাশি ভর্তুকিমূল্যে টিকা পেতে সহায়তা করেছে।আমরা মোট ৩৩ কোটি টিকা সংগ্রহ করেছি বা পেয়েছি। এর মধ্যে ১৮ কোটি কেনা, বাকি ১৫ কোটি অনুদান ও উপহার হিসেবে পাওয়া।
৫ থেকে ১১ বছর বয়সী প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ শিশুর মধ্যে ৬৮ শতাংশকে টিকা দেয়া হয়েছে। বড়দের জন্য নির্দিষ্ট কেন্দ্র আছে। তবে শিশুদের জন্য টিকাকর্মীদের প্রতিটি স্কুল, কিন্ডারগার্টেন, মাদ্রাসা, মক্তবে যেতে হয়। শিশুদের বাড়তি যত্ন নিয়ে টিকা দিতে হয়। এক দিনে বেশি টিকা দেওয়া যায় না। এ কারণে সময় একটু বেশি লেগেছে। স্কুলবহির্ভূত শিশুদেরও টিকা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রয়োগের সময় কিছু টিকা নষ্ট হওয়া প্রসঙ্গে শামসুল হক বলেন, টিকা দেওয়ার সময় সারা বিশ্বে ১০ শতাংশ টিকা নষ্ট হতে দেখা যায়। করোনা টিকার ক্ষেত্রে বিশ্বে ২ থেকে ৫ শতাংশ টিকা নষ্ট হতে দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দশমিক ৫ শতাংশ সিস্টেম লস হয়েছে। অর্থাৎ দুই শ ডোজ টিকা দিলে এক ডোজ টিকা ব্যবহার করা যায়নি।এটি অনেক বড় সাফল্য।
এছাড়া টিকার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, কোনও টিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি বা তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েনি। এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক ছিলাম। কেন্দ্র ও মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা আছে। আমরা যখনই দেখেছি, মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে, তখনই বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়ে টিকার মজুত শেষ করার চেষ্টা করেছি। টিকা নষ্ট হতে দিইনি।