সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, রাজপথই কেন চায় বিএনপি
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় মহাসমাবেশ করতে চায় মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ‘জনসাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে’ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন।
তবে এমন সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ বিএনপি। দলটি বলছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে তারা প্রস্তুতি নেয়ার মত সময় পাবে না। বিষয়টি সরকারের নজরে আসলে ৮ ডিসেম্বরে ছাত্রলীগের সম্মেলন দুদিন এগিয়ে ৬ ডিসেম্বর করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ১০ ডিসেম্বর যেন দেশে কোনও পরিবহন ধর্মঘট না ডাকা হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধও করেছে সরকার।
এরপরও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। কেন বিএনপি তাদের অবস্থান থেকে সরছে না ? বিএনপির এমন অনড় অবস্থানের কারণে প্রশ্ন উঠেছে, তারা কি তাহলে রাজপথে সংঘাত চায়? লাশ ফেলতে চায়?
সাধারণত কোন রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ মাঠে ময়দানে আয়োজন করা হয়। ঢাকার বাইরের মহাসমাবেশগুলো বিএনপি মাঠেই করেছিল। কিন্তু ঢাকায় তারা মাঠের বদলে পল্টনের মতো ব্যস্ত রাস্তায় করতে আগ্রহী বেশি।
সমালোচকদের মতে, রাস্তায় সমাবেশ করলে সহিংসতা সৃষ্টি করে সরে যাবার সুযোগ ছাড়াও রাজপথ দখল করে রাজধানীকে অচলাবস্থা সৃষ্টির সুযোগও থাকে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে বিএনপি এমন সব কথাবার্তা ছড়িয়েছে যা জনমনে শঙ্কা তৈরী হয়েছে। যেমন, ঢাকা দখল করে সরকার পতন, দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়, তারেক জিয়া আসবেন ১১ ডিসেম্বর ইত্যাদি। এসব ঘোষণায় একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ শঙ্কিত তেমনই স্থান নির্ধারণ নিয়ে বিএনপির অযৌক্তিক দাবীও সন্দেহের উদ্রেক করেছে।
এছাড়া ৫ মে হেফাজতের রাজপথ দখল করে বসে পড়া এবং ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি- জামায়াতের সহিংসতার অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ভাষায় ৫০ লাখ লোকের যে সমাবেশ হবে, তা অনুমতি না পেলেও রাজপথে অনুষ্ঠিত করার যে একগুঁয়েমি ঘোষণা বিএনপি দিয়েছে তার পেছনে ভয়ঙ্কর কোনও পরিকল্পনার শংকা উড়িয়ে দেয়া যায় না।