বাংলাদেশ ব্যাংকের ২ বিলিয়ন ডলার গায়েবের গায়েবী তথ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্টস থেকে হঠাৎ ২ বিলিয়ন ডলার বা ২০০ কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার গায়েবী তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার মিশনে নেমেছেন জ্যাকব মিল্টন নামের একজন বাংলাদেশি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি নেতা হিসেবেই সমধিক পরিচিত।
সম্প্রতি ইউটিউবে নাগরিক টিভি নামে ভূঁইফোড় এক অনলাইন প্লাটফর্মের সাক্ষাৎকারে টাকা গায়েবের বিষয়টিকে শতভাগ সত্য বলে উপস্থাপন করেন। তবে কবে কিভাবে টাকা গায়েব হয়েছে বা এমন সংবাদের সোর্সই বা কি তার স্বপক্ষে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
জ্যাকব মিল্টন বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সরকার রপ্তানি আয় ৩৫.৩৪ বিলিয়ন ডলার দেখালেও ২০১৯-২০ অর্থবছরের হিসাবে দাঁড়িয়েছিল ৩৩.৩৭ বিলিয়ন ডলার, যা প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের ফারাক।
বিষয়টি জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্টস সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান না থাকার কারণে এই ধরনের উদ্ভট তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে মূলত দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার জন্যই গুজবের আশ্রয় নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
টাকা গায়েব প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পর ব্যাংকের হিসাব পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়।ওই অর্থ বছর ইপিজেড হতে প্রাপ্ত আয়ের তথ্যে বার্ষিক রিপোর্ট উপস্থাপন করা হতো, যা এখন ডিজিটাল বা রিয়েল টাইমে করা হয়। ওই অর্থবছর রপ্তানি হিসাবের মধ্যে জাহাজ ভাড়া, ইন্সুরেন্স, অর্ডার বাতিল হওয়া, কমিশনসহ আরও আনুষঙ্গিক বিষয় যোগ হতো, তবে বর্তমানে শুধু আয়ই যোগ হয়।
জানা যায়, করোনাকালে বাংলাদেশ থেকে বেশকিছু রপ্তানিকৃত অর্ডার বাতিল হয়। তবে বাতিলকৃত সম্ভাব্য আয়ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যোগ হয়েছিলো, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে হয়নি।এ কারণে হিসেবের পরিবর্তন হয়। এখানে কোনও অর্থ তছরূপের বিষয় নেই।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বসে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে ‘কটূক্তি’করাসহ দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অশ্লীল ও মিথ্যা, মানহানিকর, অপপ্রচারমূলক মন্তব্য করে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে ফেসবুকে পাবলিশ করেন জ্যাকব মিল্টন। ২০১৮ সালে সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে তার নামে মামলা দায়ের করা হয়।