১ হাজার কোটি টাকার সুপারি বিক্রির সম্ভাবনা
লক্ষ্মীপুরে চলতি মৌসমে ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত সুপারিতে ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের সম্ভাবনা রয়েছে।
গাছ থেকে সুপারি পাড়া, বিক্রি ও সংরক্ষণের জন্য এই মৌসুমে জেলায় কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। সুপারি উৎপাদনেও দেশসেরা লক্ষ্মীপুর। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-খুলনা-ময়মনসিংহেও পাঠানো হয় এখানকার সুপারি।
স্বল্প সুপারিতে কৃষকরা প্রচুর লাভবান হয়েছে। সুপারি বাগান কারো পরিকল্পিত সৃষ্টি নয়। এসব সুপারি পূর্ব পুরুষের লাগানো এবং বাড়ির আশপাশে ছড়িয়ে থাকা গাছ থেকেই উৎপাদিত হয়। তবে কিছু সচেতন ব্যক্তি রয়েছেন, যারা বছরে একাধিকবার বাগানের আগাছা পরিষ্কার করেন। এছাড়াও গাছের আশপাশে সার ব্যবহার করেন।
জানা গেছে, একেকটি সুপারি দুই টাকা পর্যন্ত কিনতে হয়েছে। আকার অনুযায়ী প্রতি পোণ সুপারি ১৩০-১৮০ টাকা পর্যন্ত কিনেছেন তারা। এতে প্রতি কাউন সুপারি ২৫০০-২৬০০ টাকা পড়েছে। তারা সুপারি ভিজিয়ে ও শুকিয়ে বিক্রি করেন। এসব প্রক্রিয়াজাত করতে প্রতি কাউন সুপারিতে আরও ২-৩ হাজার টাকা খরচ পড়বে।
জানা গেছে, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি সুপারির মৌসুম। তবে অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শেষ সময় পর্যন্ত সুপারি সবচেয়ে বেশি সংগ্রহ করা হয়। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, রায়পুর, সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সুপারি বিক্রি করতে দেখা যায় কৃষক ও গৃহস্থদের। আর সাপ্তাহিক হাটগুলো জমে ওঠে সুপারি ব্যবসায়ী ও কৃষকদের উপস্থিতিতে। গ্রামের গৃহবধূদেরকেও সুপারি বিক্রি করতে হাটে দেখা যায়।
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা লক্ষ্মীপুরে এসে সুপারি কিনে নানা প্রান্তে নিয়ে যান। সেখান থেকে আবার বিদেশেও পাঠাচ্ছেন আড়তদাররা।
সুপারি ব্যবসায়ীন্ জানান, এ জেলার সুপারির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে গ বছর বেশি দামে সুপারি কিনলেও, বিক্রিতে তারা ভালো দাম পাননি। এবারও সুপারির দাম বেশি। তবুও ব্যবসার উদ্দেশ্যে তারা সুপারি ক্রয় করে সংরক্ষণ করছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, লক্ষ্মীপুরে ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। এবার সুপারি থেকে হাজার কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সুপারি থেকে গত বছর প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা আয় করেছে লক্ষ্মীপুরের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, উপকূলীয় জেলা হওয়ায় এখানে সুপারি চাষ বেশি হয়। এবার একেকটি সুপারি দেড় থেকে দুই টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন কম হলেও সুপারি বিক্রিতে এবার ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের সম্ভাবনা রয়েছে। সুপারি পাড়া থেকে শুরু করে সংরক্ষণ ও বিক্রি পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।