খোসপাঁচড়া রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা

  ডা. রেবেকা সুলতানা
  প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৪১, শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ৩০ আশ্বিন ১৪২৯
ডা. রেবেকা সুলতানা
ডা. রেবেকা সুলতানা


চুলকানির রোগগুলোর মধ্যে স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া। এটি একটি বিরক্তিকর ও বিব্রতকর রোগ। যেখানে সেখানে শরীর চুলকানোর মতো বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। 

এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে আসা অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারেন। এতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এর কারণ তাদের চামড়া বেশ সংবেদনশীল থাকে।

অনেক কারণে শিশুদের খোসপাঁচড়া হয়ে থাকে। যেমন-তারা হাত-পা ভালো করে ধুতে জানে না। হাইজেনিক ব্যবহার তারা জানে না। এটি প্রথমে ফুসকুড়ির মতো দেখা যাবে, লাল লাল দানা দেখা দেবে। হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে হয় সাধারণত, এরপর কনুইতে এবং বগলে হয়ে থাকে। পরে সেটি নাভির কাছে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।

শিশুদের খোসপাঁচড়া দেখা দেওয়ার পর সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে তারা চুলকিয়ে ইনফেকশন করে ফেলে। একটা পর্যায়ে সেখানে পুঁজ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে ইনফেকশন হলে সেটি কমানোর ওষুধ দিতে হয়। এরপর গায়ে লাগানোর ওষুধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে পুরো পরিবারকে একত্রে চিকিৎসা নিতে হয়।

বড়দের ক্ষেত্রে যখন স্ক্যাবিস হয় তখন তার চেনার লক্ষণও প্রায় একই। শরীর অনেক বেশি চুলকাবে বিশেষ করে রাতে বেশি চুলকানি হয়। এক বিছানায় একসঙ্গে অনেকেই গাদাগাদি করে ঘুমালে, এক তোয়ালে বা বালিশ-চাদর ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় এ রোগ।

সাধারণ কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ ধরনের রোগ এড়ানো সম্ভব। পরিবারের সদস্যদের তোয়ালে ও জামাকাপড়, বালিশ আলাদা ব্যবহার করা উচিত। জামাকাপড় ও নিয়মিত ব্যবহার্য জিনিস নিয়মিত সাবান দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে অন্তত চার ঘণ্টা শুকাতে হবে। সম্ভব হলে ইস্ত্রি করে ব্যবহার করতে হবে।

স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় পারমিথ্রিন ক্রিম সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে হবে। ওষুধের ব্যবহার করতে হবে নিয়ম মেনে। পরিপূর্ণ চিকিৎসা না দিলে পূণরায় স্ক্যাবিস হতে পারে। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে বা ঘা হয়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। চিকিৎসা নেওয়ার পরও সব কাপড়চোপড়, চাদর, তোয়ালে, বালিশ, গরম সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে। খোসপাঁচড়া সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে কিডনিও প্রদাহে আক্রান্ত হতে পারে।

লেখক : চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, ঢাকা।

বিষয়ঃ WHO বাংলাদেশ

Share This Article