নিষেধাজ্ঞায় নিজেই কাবু ইউরোপ

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১০:০৭, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ২০ ভাদ্র ১৪২৯

 

রজত রায়

করোনার আঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকটকে ক্রমেই প্রকট করছে। ইউরোজোনে মূল্যস্ফীতির হার গত জুলাইয়ে ৮ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছেছে। গত মাসে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। জার্মানি ও স্পেনে মূল্যস্ফীতি জানান দিচ্ছে বাড়তে থাকা খাবারের দাম। মিউনিখভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক রিসার্চ (আইএফও) জানিয়েছে, জার্মানির মূল্যস্ফীতি বছরের অবশিষ্ট সময়ে আবার কমতে পারে। তবে খাবারের দাম এখনো বাড়তির দিকে। অন্যদিকে ৩৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির মুখে স্পেন। স্পেনের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়েছে, ১৯৮৪ সালের পর দেশটিতে জুলাই ২০২২-এ ভোগ্যপণ্যের দাম দ্রুতগতিতে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি এখন স্পেনের অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


 

ইউরোজোনের দেশগুলোতে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতির রাশ টেনে ধরতে এবার ১১ বছরের মধ্যে প্রথম সুদের হার বাড়িয়েছে ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি)। ইসিবি তাদের মূল সুদের হার ০.৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়েছে। এক দশকের মধ্যে প্রথম এক লাফে সুদের হার এতটা বেড়ে যাওয়া অনেকটা অপ্রত্যাশিত ছিল। মূল্যস্ফীতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে জিনিসের দাম। এক বছর আগের তুলনায় এক বোতল দুধের দামও অনেক বেড়ে গেছে। ইউরোজোনে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া ব্রিটেনে মূল্যস্ফীতি গত জুলাই মাসে ১০ দশমিক ০১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (ওএনএস) জানিয়েছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক বাদেই সরকারি খাতে দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৯৪ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ড। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যুক্তরাজ্য সরকারের ধার নেওয়ার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক উল­ম্ফন দেখা গেছে। জ্বালানির আকাশচুম্বী মূল্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তারা। এ মুহূর্তে যদি কর কমানো হয়, তাহলে তা মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দেবে। যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি পারিবারিক আয়ে আঘাত হানার পাশাপাশি সরকারি ঋণে সুদের বিলও বাড়ছে। যুক্তরাজ্য তার ঋণের সুদ বাবদ গত জুলাইয়ে ৫৮২ বিলিয়ন পাউন্ড পরিশোধ করেছে, যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেশি।

রাশিয়ার গ্যাসের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে বিকল্প উৎসের সন্ধানে ইউরোপ যখন মরিয়া, তখনই এ উদ্যোগ নেওয়া হলো। অর্থাৎ সাহারা মরুভ‚মির উপর দিয়ে ইউরোপে বাড়তি গ্যাস সরবরাহে এগিয়ে এসেছে আফ্রিকার তিন দেশ আলজেরিয়া, নাইজার ও নাইজেরিয়া। পাইপলাইনটি বানাতে খরচ হবে ১ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ৩ হাজার কোটি কিউবিক মিটার গ্যাস যাবে ইউরোপে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো তাদের মোট তরল প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি সরবরাহের ১৪ শতাংশ নাইজেরিয়া থেকে আমদানি করে থাকে। সাহারা পাইপলাইন তৈরি হলে গ্যাস সরবরাহ দ্বিগুণ বাড়বে। সাহারা মরুভ‚মির উপর দিয়ে পাইপলাইন তৈরির এ প্রকল্পটি প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে। ২০০৯ সালে দেশগুলোর মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও সই হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে এ প্রকল্পে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু এত দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা কি সম্ভব? রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে গ্রীষ্মেও এ যন্ত্রণাদায়ক গরম ইউরোপের জ্বালানি ব্যবস্থার ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করেছে। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। এর আগে ২০০৮ সালে জর্জিয়ার দুটো অংশ আবখাজিয়া ও দক্ষিণ ওশেতিয়াকে একইভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাশিয়া। কিন্তু তারপরও জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪০ ভাগ গ্যাস এবং ২৭ ভাগ তেলের চাহিদা মেটাচ্ছে। ইউরোপজুড়ে এ জ্বালানি ঘর গরম রাখতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এবং শিল্পে ব্যবহার হয়। এ নির্ভরতা কাটাতে অন্তত আরও পাঁচ বছর প্রয়োজন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতে পারে এমন আশঙ্কা একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল না। ইউক্রেনে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে, কিন্তু সেই প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ হবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।

বিবিসির তথ্য মোতাবেক, ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির পথ খুলতে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পাঁচ মাস আগে যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইউক্রেনের রপ্তানি মুখ থুবড়ে পড়ে। ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন গুদামে প্রচুর খাদ্যশস্য মাসের পর মাস রপ্তানির জন্য পড়ে রয়েছে। কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসা বন্দরের গুদামেই এখন দুই কোটি টনের মতো খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এগুলো এখন আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে, সেখানে রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে মাত্রায় অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, তাতে এ চুক্তি শেষ পর্যন্ত কতটা কাজ করবে এবং কতদিন টিকবে তা নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার পর সরবরাহ লাইন সংস্কারের নামে পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়া। সম্প্রতি লাটভিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে রাশিয়া। গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, গ্যাস উত্তোলনের শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে তারা প্রতিবেশী দেশটিতে সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। লাটভিয়ার জ্বালানি সংস্থা লাতভিজাস গেজ এর আগে জানিয়েছিল, তারা রাশিয়া থেকে গ্যাস কিনছে এবং গ্যাজপ্রমের সঙ্গে তাদের এ বাণিজ্যে রুবলের পরিবর্তে ইউরোতে অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। এমন ঘোষণার একদিন পরই গ্যাজপ্রমের সরবরাহ বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। কিন্তু ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমালেও পাওয়ার অব সাইবেরিয়া পাইপলাইন দিয়ে চীনে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ ঠিকই বাড়িয়েছে রাশিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে গত জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত চার দশকে দেশটিতে এত মূল্যস্ফীতি দেখা যায়নি। ফ্রান্সে মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এটি ৩৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। জার্মানির মাত্র ৪২ শতাংশ মানুষের নিজের বাড়ি রয়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে নতুন যারা বাড়ি কিনতে চাচ্ছেন, তাদের পক্ষে বিষয়টি কঠিন হয়ে যাচ্ছে; কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাড়ির দামে লাগাম টানতে গৃহঋণের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২১ সালে জার্মানিতে গ্যাসের ৫৫ শতাংশই ছিল রাশিয়া থেকে আসা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন সে হার ৩৫ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া হঠাৎ করেই গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। সেবা খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়মিতই বিপত্তিতে পড়ছে। অর্থনৈতিক সংকটের দিকে যাচ্ছে জার্মানি। দেশটিতে গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে এবং কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম রপ্তানির চেয়ে বেশি আমদানি করেছে জার্মানি। প্রতিযোগিতার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় জার্মান প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে।

রাশিয়ার সরবরাহ করা গ্যাস পুরোপুরি বন্ধ হলে ঠিক কী ঘটতে পারে? জার্মানির অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রোগনোস বলছে, আর চার সপ্তাহ পরই সবার জন্য গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। আইন অনুযায়ী বসতবাড়ি, সমাজসেবা প্রতিষ্ঠান এবং হিটিং সরবরাহকারীদের গ্যাস দিতেই হবে। ফলে গ্যাস বন্ধের প্রথম প্রভাব পড়বে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর। ইস্পাত, অপরিশোধিত লোহা, রাসায়নিক ও কাচের কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসবে। সমগ্র অর্থনীতিই এর ফলে সংকটে পড়বে। অর্থাৎ রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হলে বছরের শেষে জার্মানির অর্থনীতি ১২ দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

প্রশ্ন হলো, রাশিয়া ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া কী বা তারা কী ভাবছে? জার্মান সরকার বলছে, কারিগরি কোনো কারণ নেই, যাতে গ্যাজপ্রম গ্যাস সরবরাহ কমাতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি নীতিবিষয়ক প্রধান কাদরি সিমসন একে রাজনৈতিক ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে ইউরোপের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ‘প্রকাশ্য যুদ্ধ’ আখ্যায়িত করেছেন। লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক দ্য এনার্জি ইনস্টিটিউটের ফেলো বোইট ডৌরিয়ান বলেছেন, রাশিয়া গ্যাসকে ক্রমেই অস্ত্রে রূপান্তর করছে। তার মতে, রাশিয়া এখনো নিজেকে জ্বালানি সুপার পাওয়ার হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে এবং দেখাতে চাইছে যে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার পালটা পদক্ষেপ নিতে পারে তারা। তবে রাশিয়া থেকে জার্মানির গ্যাস আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে দেশটির ৫৬ লাখ মানুষ রাতারাতি চাকরি হারাতে পারেন। দেশটির রাসায়নিক, ইস্পাত, কাচ ও কাগজ শিল্পে তো বটেই, খাদ্য বা চীনা মাটির বাসন উৎপাদন শিল্পেও এর প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি ইউরোপের গ্যাস সরবরাহ আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে ইউরোপে আসন্ন শীত মৌসুমে বিভিন্ন পরিকল্পনায় বিঘœ ঘটবে এবং চলমান গ্যাস সংকট আরও বাড়বে। বিশেষ করে শীত মৌসুমটা সামাল দেওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়বে। রাশিয়ার গ্যাসের ওপর জার্মানদের অতিরিক্ত নির্ভরতা যে কোনো বিপর্যয়ের সময় ভোগান্তির কারণ হয়ে দেখা দেবে। কিন্তু তারপরও সেই নির্ভরশীলতা কমানো হয়নি। বিকল্প কোনো ব্যবস্থার চিন্তাও মাথায় রাখা হয়নি। ইউরোপ, বিশেষ করে জার্মানির অবস্থা এখন বেশি খারাপ। একদিকে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ, অন্যদিকে রাশিয়ার ওপর জ্বালানি ছাড়াও অন্য নানা নির্ভরতার কারণে চাইলেই কড়া পদক্ষেপ নিয়ে রাশিয়াকে একঘরে করে দেওয়া যাচ্ছে না। মুখে কড়া কথা বললেও আদতে কঠোর অর্থনৈতিক সামরিক বা ক‚টনৈতিক কোনো পদক্ষেপেই নিতে পারছে না জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে ইউরোপের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো গণতান্ত্রিক দেশে অর্থনীতি নিম্নগামী হতে থাকলে এর প্রভাব সমাজ ও রাজনীতিতে পড়তে বাধ্য। ‘ফরেন পলিসি’র গবেষণা বলছে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে পশ্চিমা ধনিক শ্রেণির ওপর চাপ বাড়ছে। মুদ্রাস্ফীতির চাপ চলতে থাকলে অচিরেই পশ্চিমা ধনীদের মুনাফায় টান পড়বে। করোনা মহামারির কারণে একটা বিশাল ধাক্কা ইতোমধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পড়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে জ্বালানি তেলের মূল্য এতটাই বেড়ে গেছে যে, আগামী শীতে ইউরোপের দেশগুলোর অবস্থা কী হবে, তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত ইউরোপীয় নেতারা। তাহলে ভবিষ্যৎ কী?

গত ১৩ আগস্ট সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। এ পরিস্থিতি আংশিকভাবে আমরা নিজেরাই তৈরি করেছি। এমনকি কীভাবে এটি শেষ হবে বা এরপর কী হতে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা ছাড়াই।’ হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭০-এর দশকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিখ্যাত পিংপং ক‚টনীতির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর সূত্র ধরেই ১৯৭২ সালে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে চীন সফর করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। কিসিঞ্জারের ক‚টনীতির লক্ষ্য ছিল বিশ্ব রাজনীতিতে সমাজতন্ত্রের প্রভাব ঠেকিয়ে বেইজিংকে মস্কো থেকে দূরে সরিয়ে রাখা, যাতে বিশ্ব রাজনীতিতে শক্তিসাম্য বজায় থাকে। কিসিঞ্জারের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এখন আর রাশিয়া বা চীনের বিরুদ্ধে অন্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। যেমনটি ছিল সত্তরের দশকে। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখে, তাহলে আসছে শীতে যেসব ইউরোপীয় দেশ জ্বালানি সংকটের সম্মুখীন হবে, তারা রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতেও পারে।

রজত রায় : অর্থনীতিবিষয়ক লেখক

[email protected]

Share This Article

কোনো প্রার্থীর প্রচারে থাকলে এমপিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর

‘প্রার্থিতা নিয়ে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা দলীয় নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা’

মার্কিন হুমকি উপেক্ষা করে সম্পর্ক বাড়ানোর ঘোষণা ইরান-পাকিস্তানের

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে পাকিস্তানকে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র

পাটশিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে : নানক

বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা

উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী তিমুর ইভানভ

রাশিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রীকে গ্রেপ্তার

ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় ভারত

উত্তপ্ত মধুখালী, পুলিশের ওপর হামলা, সংঘর্ষে প্রাণ নাশ!


ব্যর্থতা কাঁধে নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দাপ্রধানের পদত্যাগ

তাইওয়ানে একদিনে ৮০ বারেরও বেশি ভূমিকম্প

ইসরাইল সরকার ২০২৩ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে : যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরবে ভারী বৃষ্টি, ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট

বিশ্বজুড়ে বেড়েছে সামরিক ব্যয়, শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র

পশ্চিমের সাথে সরাসরি সংঘাতের হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

পাকিস্তানে ইরানের প্রেসিডেন্ট

৩ দিনের সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি পাকিস্তানে

২০২২ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছেন ৬৬ হাজার ভারতীয়

মালদ্বীপের নির্বাচনে ভারতবিরোধী মুইজ্জুর দলের বিশাল জয়

মালদ্বীপে বড় জয়ের পথে ‌‘ভারতবিরোধী’ মুইজ্জুর দল

ইসরায়েলি গণহত্যাকে রাজনৈতিক সুরক্ষা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : হামাস