মার্কিন রাষ্ট্রদূত'র সঙ্গে কি আলাপ আইএমএফ কর্মকর্তাদের?

চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ার ইতিবাচক সাড়া দেয় সংস্থাটি। এর মধ্যেই গত ১৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান জয়েন্দু দে’সহ অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যাহ্নভোজ সভায় ডাকেন পিটার হাস।
ঢাকায় দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহী পিটার হাস। নির্বাচনকে ঘিরে সব রাজনৈতিক দলের দুয়ারেই কড়া নেড়েছেন এই মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বুনেছেন ‘চক্রান্তের’ জালও। তবে এসবে সায় না মেলায় এবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে। এরই মধ্যে নিজ বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়ে কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও। পিটার হাসের এমন কর্মকাণ্ডে সন্দেহ হয়েছে অনেকেরই।
বাংলাদেশে অর্থনীতিকে সঠিক পথে আনা ও আর্থিক খাতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে সন্তুষ্ট আইএমএফ। সন্তুষ্ট না হলে তারা কখনো অর্থ ছাড় দেয় না। তাই চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ার ইতিবাচক সাড়া দেয় সংস্থাটি। এর মধ্যেই গত ১৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান জয়েন্দু দে’সহ অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যাহ্নভোজ সভায় ডাকেন পিটার হাস। সভায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিসহ আগামী জাতীয় নির্বাচন ইস্যু তুলে ধরেন তিনি। তবে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি কেউই।
বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিলকে ঘিরেই মূলত ১৫ নভেম্বর নিজের গুলশানের বাসায় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। ওই বৈঠকে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে আইএমএফ’র ঋণ আটকানো নিয়ে। একই সঙ্গে আগামী মাসে বাংলাদেশকে দেয়া সম্ভাব্য কিস্তি না ছাড়ারও অনুরোধ জানানো হয়। আর দিলেও যেন দেয়া হয় ‘অপূরণীয় শর্তে’। এমনকি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ফাটল ধরাতে আইএমএফ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কুপরামর্শও দিয়েছেন এই মার্কিনি।
সমালোচকরা বলছেন, আর্থিক খাত নিয়ে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের। অথচ আলোচনা করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত; যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন। দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে এতদিন কূটকৌশল খাটিয়ে ব্যর্থ হয়ে পিটার হাস এখন বেছে নিয়েছেন অর্থনীতিকে। কারণ বৈদেশিক ঋণ আটকে গেলে অর্থনীতিতে ধসের ঝুঁকি থাকে। ফলে বেকায়দায় পড়তে হয় সরকারকে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের এবারের টার্গেট ‘অর্থনৈতিক খাত’।