নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষণ কতটা জরুরি?

বিশ্বের কোনো দেশেই ‘ইলেকশন অবজারভার’ যায় না। ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্রেও এমন নজির নেই। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নিয়েই সবার মাথাব্যথা। আগের সব নির্বাচনে বিদেশি নাগরিকরা সন্তুষ্টির কথা জানালেও প্রধান বিরোধী দল ক্রমাগত অসন্তোষ জানিয়ে আসছে।
নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেই গরম হয়ে ওঠে রাজনীতির মাঠ। তৎপরতা বাড়ে ‘নামে-বেনামে’ দেশি-বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংগঠনের। পিছিয়ে থাকেন না ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও। তবে ভোটের মাঠে বিদেশি পর্যবেক্ষক প্রয়োজন বা জরুরি নয় বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
দেশে এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন উপজেলা-পৌরসভা ও ইউনিয়ন নির্বাচনে স্বচ্ছতার প্রমাণ মিলেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসা ইইউ-এর প্রাক পর্যবেক্ষক দলের পাঠানো প্রতিবেদন ভালো হওয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন মনে করেনি ইইউ। এছাড়া বাজেট নিয়েও রয়েছে সংকট।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশে শুরু হয় বিদেশি পর্যবেক্ষণ। এরপর থেকে বাংলাদেশের প্রায় সব জাতীয় নির্বাচনেই পর্যবেক্ষণের তাগিদ থাকে বিদেশিদের। তাদের আনতে জোর চেষ্টা চালান বিরোধী শিবিরের লোকজনও।
কিন্তু নবম সংসদ নির্বাচনের পর বিদেশি পর্যবেক্ষকদের তেমন দেখা মেলেনি। কেননা ২০০৯ থেকে হাজারও নির্বাচনের মধ্যে দু-একটি ছাড়া অধিকাংশই সুষ্ঠু হয়েছে। একই সঙ্গে নিরপেক্ষ ভোট আয়োজনে সরকারও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সচেতন মহল বলছে, বিশ্বের কোনো দেশেই ‘ইলেকশন অবজারভার’ যায় না। ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্রেও এমন নজির নেই। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নিয়েই সবার মাথাব্যথা। আগের সব নির্বাচনে বিদেশি নাগরিকরা সন্তুষ্টির কথা জানালেও প্রধান বিরোধী দল ক্রমাগত অসন্তোষ জানিয়ে আসছে। এজন্য এবারের নির্বাচনেও চাপ বাড়ছে বিদেশিদের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যেকোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মূল লক্ষ্য ভোটারের বিশ্বাস বাড়ানো। একই সঙ্গে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রচার করা। কিন্তু কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক মন্তব্য করলে পর্যবেক্ষকের বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। আর বাংলাদেশে এমটিই ঘটছে। কেননা পর্যবেক্ষকরা একটি নির্দিষ্ট দলের হয়ে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আসেন। তাই নির্বাচনে এ ধরনের বিদেশি পর্যবেক্ষণ জরুরি নয় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।