আদিলুর–এলানের পক্ষে না দাঁড়াতে বিদেশিদের প্রতি ১৮১ বিশিষ্ট নাগরিকের আহ্বান

অসত্য তথ্য প্রচারের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার মামলায় ‘অধিকার’এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলানের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে একটি মহল। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে দুটি পৃথক বিবৃতি প্রকাশ করেছেন ১৮১ বিশিষ্ট নাগরিক, তারা বলেছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী অবস্থান নেয়ায় তাঁরা মর্মাহত। কেননা এখানে সরকার নয় বরং রাষ্ট্রকে বিতর্কীত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।
বিবৃতি দুটির একটিতে ১৫৫ বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ড. বজলুল হক খন্দকার, চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক্ আলভী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হারুন অর রশিদ, অধ্যাপক অনুপম সেন প্রমূখ। অন্যটিতে ২৬ বিশিষ্ট নাগরিক পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক জাফর ইকবাল, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও রামেন্দু মজুমদারসহ অনেকেই।
বিবৃতিদাতারা বলেন, আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রকাশের পর থেকেই বিতর্কিত, উগ্রবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সুরে দেশি-বিদেশি কিছু সম্মানিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিবাদ করার বিষয়টি বিস্ময়কর। এমন প্রতিবাদ দেশের বিচার বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, যা আইন বহির্ভুত কাজ। এটি সরকারের কোন বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ নয়, খোদ আদালতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। যেখানে একটি চক্রের ইন্ধন রয়েছে ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপল চত্বরে হেফাজতে ইসলাম ব্যপক ধংসযজ্ঞ চালায়, তাই কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে সমাবেশটি ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ, অথচ মানবাধিকার সংগঠন অধিকার তাদের ওয়েবসাইটে ৬১ জন নিহত হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যে প্রতিবেদনে একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার এসেছে, জীবিত ব্যক্তিকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং অন্য ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের নাম এই তালিকায় যুক্তকরাসহ কাল্পনিক ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করে।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘রায়ে কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তারা সেটি না করে রায়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, কিন্তু মিথ্যা রটনা কোন মত প্রকাশ হতে পারে না। মতপ্রকাশের অধিকারের অজুহাতে যেন উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার সুযোগ না পায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি ।’