‘তৃণমূল বিএনপি’: নতুন আতঙ্কে ‘আসল বিএনপি’

সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় বিএনপি। আন্দোলনের জন্যে তাদের প্রয়োজন কঠোর ঐক্য। অথচ এ অবস্থাতেই বিএনপির একাধিক অবহেলিত শীর্ষ নেতাদের নিয়ে গঠিত হলো ‘তৃণমূল বিএনপি’।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় সম্মেলন ও কাউন্সিলের মাধ্যমে ‘তৃণমূল বিএনপি’গঠিত হয়। ওই কমিটিতে সাবেক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমশের মবিন চৌধুরীকে সংগঠনটির চেয়ারপারসন ঘোষণা করা হয়। এছাড়া খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে মহাসচিব এবং সেলিমা হুদাকে দলের নির্বাহী চেয়ারপারসন করে ২৭ সদস্যের আংশিক কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিএনপির দীর্ঘদিনের অবহেলিত নেতারাও ‘তৃণমূল বিএনপি’ তে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রায় ৪০ জন বিভিন্ন পর্যায়ের এসব নেতা শীঘ্রই দলটিতে যোগ দিবেন।
মূলতঃ বিএনপির রাজনীতি করে নির্যাতিত হওয়ার পরেও দলের পক্ষ থেকে কোনও খোঁজ-খবর না রাখা, ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করা, কমিটি বাণিজ্যের শিকার হওয়া, তৃণমূলে জনপ্রিয়তা থাকার পরও নির্বাচন করতে না দেয়াসহ বিভিন্ন কারণে তারা বিএনপি ছেড়েছিলেন। এসব ভুক্তভোগী নেতারাই এখন বিএনপির মনোভাবপুষ্ট দল ‘তৃণমূল বিএনপি’গড়ে তুলেছেন।
নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের পর পাল্টে যাচ্ছে রাজনীতির অনেক হিসাব-নিকাশ। যাতে চিন্তিত হয়ে পড়েছে আসল বিএনপি।
তৈমুর আলম খন্দকার নারায়নগঞ্জের সন্তান। দেশের আন্দোলন-সংগ্রামে এই জেলাটির গুরুত্ব অনেক। বিএনপিতে থাকাকালীন সড়ক অবরোধ করে অনেক আন্দোলন সফল করেছেন তৈমুর। তার মত বড় মাপের একজন নেতাকে হারানোর ফল বিএনপিকে ভুগতে হবে।
এছাড়া শমসের মবিন চৌধুরী ছিলেন একজন ঝানু কূটনীতিক। বিএনপির আন্তর্জাতিক লবিং গড়ে উঠেছিলো তার হাত ধরেই। তার অভাবও ভোগাবে বিএনপিকে।
এদিকে রাজনীতির মাঠেও এর বড় প্রভাব পড়তে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসল বিএনপি ভোটে না এলেও এখন তৃণমূল বিএনপি ভোটে আসবে। যাতে সুবিধা হবে আওয়ামী লীগের। এছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে একাধিক দল। বর্তমান সরকার ভোটকে কেন্দ্র করে দেশে-বিদেশে যে চাপে রয়েছে তার বড় সমাধান হিসেবে কাজ করবে এসব দলের ভোটে অংশগ্রহণ। আর এসব হিসেব -নিকেশ বিএনপির জন্য কঠিন হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।