‘কাঁধে কাঁধ’ মিলিয়ে সংকট মোকাবিলার প্রত্যয় মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া’র!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে ভূয়শী প্রশংসা করেছেন উজরা। বাহবা দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও। কেননা চলতি বছরের জুলাইয়ে সফরে এসে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তথা আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে পাশাপাশি সমাবেশ করতে দেখেছিলেন তিনি।
মাস দুয়েক আগে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। এরপরই দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ নিয়ে নানান অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে। এখানকার নির্বাচন, মানবাধিকার আর মানবিক দিকও তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এই কর্মকর্তা। এবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকেও একই বার্তা দেন তিনি।
নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে উজরার সঙ্গে বৈঠক হয় মোমেনের। বৈঠকটি ফলপ্রসূ জানিয়ে দুজনের ছবি দিয়ে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে টুইট করেছেন উজরা। টুইটারে মার্কিন এই আন্ডার সেক্রেটারি লিখেছেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তবে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আর মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব নিয়ে ফের আলোচনার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও প্রশংসা করা হয়েছে বৈঠকে’। টুইটে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বললেও বিস্তারিত জানাননি তিনি।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোমেনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, সাইড লাইন বৈঠকে বাংলাদেশে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে ভূয়শী প্রশংসা করেছেন উজরা। বাহবা দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও। কেননা চলতি বছরের জুলাইয়ে সফরে এসে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তথা আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে পাশাপাশি সমাবেশ করতে দেখেছিলেন তিনি। স্‘গণতন্ত্র চর্চা’ না থাকলে এ ধরনের সভা-সমাবেশ করা যায়না; এমন মন্তব্যও তখন করেছিলেন এই কর্মকর্তা।
এছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমেছে জানিয়ে উজরা জেয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড'র কথা এখন আর তেমন শোনা যায় না। তবে দু-একটি ঘটনা নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এলেও সরকারের স্বদিচ্ছায় এমন সংখ্যা শূন্যের কোঠায় চলে আসবে বলে বিশ্বাস করি। একই সঙ্গে দেশটির র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ওপর থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বাতিলেরও চেষ্টা রয়েছে আমাদের। সর্বোপরি বাংলাদেশ সবদিক থেকেই খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের পরিস্থিতি তৈরির প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের প্রতি আমাদের মানবিক সমর্থনও অব্যাহত থাকবে। এছাড়া রাজনৈতিক, ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশের গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অপরিসীম। একই সঙ্গে আগামীতে যেকোনো অভ্যন্তরীণ বা বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ নেবে বলেও বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।