বাংলাদেশ দেখিয়েছে কিভাবে মাল্টিপোলার গেম খেলতে হয়: গ্লোবেলী নিউজ

পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলের মতো অনেক মেগা প্রকল্প চীনের প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করালেও বাংলাদেশ চীনের পেটে ঢুকে যায়নি। এছাড়া হুমকি ধামকির পরেও আমেরিকার লেজুড়বৃত্তি করেনি। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু্ই পরাশক্তি চীন-আমেরিকা ও আঞ্চলিক শক্তি ভারতের সাথে ভারসাম্য সম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন। এটা এক দুই বছর নয়, প্রায় দেড় দশক ধরে এই ভারসাম্য চলমান রেখেছে বাংলাদেশ, যা বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
নয়া দিল্লিতে গত সপ্তাহে উন্নত দেশের জোট জি-২০ সম্মেলনের বিজয়ীদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। এই সম্মেলনে যতটুকু নজরকাড়ার কথা ছিল তারচেয়েও শতগুণ বেশি নজর কেড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি নাম হওয়ার মূল কারণ এর ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান। বঙ্গপোসাগরের তীরের ছোট দেশ হওয়া সত্বেও বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থাকে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছে উদীয়মান এই দেশটি।এমনসব মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত পত্রিকা 'Globely News'.
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রাজনৈতিক বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম 'গ্লোবেলী নিউজ'র এক নিবন্ধ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের এভাবেই প্রশংসা করা হয়েছে । ১৫ সেপ্টেম্বর এই নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। নিবন্ধটি লিখেছেন আরিফ রফিক, যিনি ফরেন অ্যাফেয়ার্স, ফরেন পলিসি, দ্য নিউ রিপাবলিক, নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং পলিটিকো ম্যাগাজিনের মতো গণমাধ্যমে বৈশ্বিক বিষয়ে বিশ্লেষণ লিখেন। এছাড়া তিনি আল জাজিরা ইংলিশ, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, সিএনএন ইন্টারন্যাশনাল ও ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওসহ অসংখ্য সম্প্রচার আউটলেটেরও বিশ্লেষক।
প্রকাশিত গ্লোবেলি নিউজের নিবন্ধে আরিফ রফিক লিখেন, পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলের মতো অনেক মেগা প্রকল্প চীনের প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করালেও বাংলাদেশ চীনের পেটে ঢুকে যায়নি। এছাড়া হুমকি ধামকির পরেও আমেরিকার লেজুড়বৃত্তি করেনি। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু্ই পরাশক্তি চীন-আমেরিকা ও আঞ্চলিক শক্তি ভারতের সাথে ভারসাম্য সম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন। এটা এক দুই বছর নয়, প্রায় দেড় দশক ধরে এই ভারসাম্য চলমান রেখেছে বাংলাদেশ, যা বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
প্রকাশিত নিবন্ধে আরও বলা হয়, কখনো আমেরিকার সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে ভারতকে ব্যবহার করেন আবার কখনো কখনো ভারত ও চীনের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে আমেরিকাকে ব্যবহার করেন।
এছাড়া আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার মতো বৈশ্বিক শক্তিধর দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখে যাচ্ছেন তিনি। এমন বৈশ্বিক কূটনীতি কোনো দেশের সরকারই বজায় রাখতে পারে না। এভাবেই বাংলাদেশ দেখিয়েছে কিভাবে মাল্টিপোলার গেম খেলতে হয়। ছোটো দেশের সরকার প্রধান হয়েও আঞ্চলিক শক্তি ও পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলির সাথে ভারসাম্য বজায় রেখে কিভাবে উন্নয়নের সোপানে দেশকে নিতে হয় তা শেখ হাসিনার কাছে শেখার আছে বলেও নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবেলী নিউজের নিবন্ধে মূলত বাংলাদেশের বহুমুখি কূটনীতির চিত্র ফুটে উঠেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতি ছিল, ''সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।'' বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ অনুসরণ করছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। আর এ কারণেই তিনি বহুমুখি কূটনীতি বজায় রেখে সবার সঙ্গে সমান তালে চলতে পারছেন বলে মনে করছেন তারা।