যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মতো নয়, ইন্দো-প্যাসিফিকে ‘তৃতীয় উপায়’ দেখালো ফ্রান্স!

অসাংবিধানিকভাবে সরকার পরিবর্তন ও বেআইনি সামরিক অভ্যুত্থানকে নিন্দনীয় বলে মনে করে পরাশক্তিধর দেশ ফ্রান্স। সংঘাত, সহিংসতা ও নৃশংস অপরাধের কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তারও আহ্বানও জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
বাংলাদেশকে ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা করছে বৈশ্বিক বৃহৎ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া। একপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ হলে অন্য পক্ষের ক্ষুব্ধ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ বিকল্প শক্তি হতে চায় পরাশক্তিধর দেশ ফ্রান্স। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাঁর দুই দিনের বাংলাদেশ সফরের শেষ দিনে এমন আগ্রহ প্রকাশ করেন।
১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ম্যাক্রোঁ-শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠক ও কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দুই নেতা। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তি, সমৃদ্ধি ও জনগণের জন্য অংশীদারিত্বকে ‘কৌশলগত’ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন শেখ হাসিনা ও ম্যাক্রোঁ।
দেশটি যেকোনো দেশে অসাংবিধানিকভাবে সরকার পরিবর্তন ও বেআইনি সামরিক অভ্যুত্থানকে নিন্দনীয় বলে মত দেয়। যৌথ ঘোষণায় সংঘাত, সহিংসতা ও নৃশংস অপরাধের কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তারও আহ্বান জানানো হয় ।
এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক, বিশেষ করে ভারত মহাসাগরকে ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
ম্যাক্রোঁ শেখ হাসিনাকে বলেন, গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসনের ভিত্তিতে নতুন সাম্রাজ্যবাদের মুখোমুখি একটি অঞ্চলে আমরা ‘তৃতীয় উপায়’ প্রস্তাব করতে চাই। অংশীদারদের হুমকি-ধামকি দেওয়া কিংবা তাদের অস্থিতিশীল পরিকল্পনার দিকে নিয়ে যাওয়ার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -চীন-রাশিয়া বিস্তৃত অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সকে বিকল্প হিসাবে গ্রহণ করতে পারে বাংলাদেশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক দ্বন্দ্বের মাঝে ফ্রান্সের ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্রেটিজিকে বিবেচনা করতে পারে বাংলাদেশ। ফ্রান্সের সাথে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সুসম্পর্ক বজায় রাখা বাংলাদেশের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।