বিদেশি শক্তিকে ‘না’ : সুশীলদের ইউটার্ন!

অতীতে বিদেশি শক্তিকে দেশের জন্য আশির্বাদ মনে করলেও এই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রভাবশালী পশ্চিমা বিশ্বের তৎপরতা বাড়ছে। গণতন্ত্র সুরক্ষার অজুহাতে পশ্চিমা কূটনীতিকরা ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা নানান ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের এমন মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে রয়েছে মিশ্র মত। বিদেশীদের তৎপরতা নিয়ে দেশের প্রধান দুটি দল পরস্পর বিরোধী ধারণা পোষণ করেন। বর্তমান রাজনৈতিক ধারায় এর পক্ষে রয়েছে বিএনপি আর বিপক্ষে আওয়ামী লীগসহ বাম ঘরানার রাজনীতিকরা। এর বাইরে দেশের সুশীল সমাজও বরাবরই বিদেশিদের তৎপরতার সাথে যেন জড়িয়েই থাকেন। কিন্তু এবার ঘটছে তার উল্টোটা।
অতীতে বিদেশি শক্তিকে দেশের জন্য আশির্বাদ মনে করলেও এই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সুজন আয়োজিত গত ১০ সেপ্টেম্বর, এক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর জন্য বিদেশিদের সমালোচনা করেন সুশীলরা। এ সময় বৈঠকে যুক্ত ছিলেন- সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, আইনজীবী শাহদীন মালিক ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদসহ প্রমুখ।
এ সময় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, বিদেশি শক্তিগুলো এখন বাংলাদেশে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান হবে না। বরং এই সংকট সমাধানে রাজনীতিবিদদেরই এগিয়ে আসার আহবান জানান তারা।
অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তীব্র সমালোচনা করে তারা আরো বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সবদিক দিয়েই পেছনের দিকে নিয়ে গেছে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে সেই সরকারের আর পূনরাবৃত্তি চায় না সুশীলরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আগে পশ্চিমা ও বিদেশি শক্তির পূজা করলেও সেই অবস্থান পাল্টেছেন। এখন তারা রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবে সমাধানের কথা বলছেন। এই কাজটি তারা এক যুগ আগে করলে দেশ আর অসাংবিধানিকভাবে পরিচালিত হতো না।
দীর্ঘ সময় পরে হলেও দেশের সুশীলদের সুবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তাদের এই ইউটার্নের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ সংকট নিয়ে বিদেশিরা নাক গলাতে ‘সাত পাঁচ’ ভাবতে হবে বলেও মনে করেন সমালোচকরা।