বঙ্গোপসাগরে ১০ ট্রলারের কোটি টাকার মাছ লুট

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ১০টি ট্রলারের এক কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুরের দিকে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বঙ্গোপসাগর থেকে ফিরে আসা জেলেরা এসব কথা জানিয়েছেন।
তারা জানান, বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগরের মাছ ধরে ফিরে আসার সময় ৩০ থেকে ৩৫ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল ১০টি ট্রলারে ডাকাতি চালায়। এ সময় প্রায় ১ কোটি টাকার মাছ, ট্রলারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। শেষে ট্রলারের ইঞ্জিনে ভাঙচুর চালায়। এ সময় জেলেরা বাধা দিলে তাদের মারধর করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, গতকাল রাত ১১টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাথরঘাটা থেকে ৯০ কিলোমিটার পূর্ব বঙ্গোপসাগরের সশস্ত্র ট্রলার ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব ট্রলারের মধ্যে পাথরঘাটার দুটি ট্রলারের নাম পাওয়া গেছে। ট্রলার দুটি হলো আবদুল্লাহর মালিকানা এফবি জুনায়েদ ও আলম মোল্লার মালিকানা এফবি শাহ মোহছেন আউলিয়া-৩।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত দুটি ট্রলারের তথ্য পেলেও ফিরে আসা জেলেরা জানিয়েছেন, অন্তত ১০টি ট্রলার ডাকাতি করে মাছ ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। এ বিষয় র্যাব, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এফবি জুনায়েদ ট্রলারের মাঝি শাহজাহান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে ফিরে আসার পথে ৩০ জনের অস্ত্রধারী ডাকাত দল ট্রলারে উঠে জেলেদের জিম্মি করে ট্রলারে থাকা ৮ লাখ টাকার মাছ, দুটি মটার, ২ সেল্ফ, ৩টি ব্যাটারি, এক হাজার লিটার জ্বালানি তেলসহ জেলেদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। সাগরের প্রায় ১০টি ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সব ট্রলারেই কমপক্ষে এক কোটি টাকার মাছ ছিল।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতি শেষে যাওয়ার সময় ট্রলারের ইঞ্জিন পিটিয়ে ভেঙে বিকল করে রেখে চলে যায়। এতে বাধা দিলে জেলেদের পিটিয়ে আহত করে। এর মধ্যে মিরাজ, খোকন, মন্টু ও শাহজাহানকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এফবি শাহ মোহছেন আউলিয়া-৩ ট্রলারের মালিক আলম মোল্লা বলেন, আমার ট্রলারে অস্ত্রধারী ডাকাতরা ডাকাতি করে অন্তত ১২ লাখ টাকার মাছ লুটে নিয়ে যায়। এ সময় মাঝি হোসেনসহ জেলেরা বাধা দিলে হোসেন মাঝিকে কুপিয়ে জখম করে। তার মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলে সাগর থেকে জেলেরা জানিয়েছেন। ট্রলার এখনো ঘাটে এসে পৌঁছায়নি।
কোস্টগার্ড (দক্ষিণ জোন) স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মোমিন বলেন, আমরা এখনো ডাকাতির খবর পাইনি। জেলেদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।