ভুয়া টাইটেল ব্যবহার: ভোটের মাঠে বিব্রত চরমোনাই পীর!
সাধারণত মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে টাইটেল বা উপাধি অর্জন করে থাকেন। নির্দিষ্ট একটি শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে পরীক্ষা দিয়ে পাস করার পর নামের আগে বা শেষে এটি যুক্ত করা হয়। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম চরমোনাই পীর মুফতি ফয়জুল করীম। তিনি পাস না করেই নামের শেষে লাগিয়েছেন ‘কাসেমি’ টাইটেল। অথচ এই টাইটেল লাগাতে হলে পড়াশোনা করতে হয় ভারতের আল্লামা কাসেম নানুতুবি রহ. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায়। কিন্তু দেওবন্দের ধারে-কাছে না গিয়েই এই টাইটেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কথিত এই পীর। তার এই ভুয়া শিক্ষা উপাধি ব্যবহারকে প্রতারণার সামিল বলে মন্তব্য করছেন শিক্ষাবিদরা।
সম্প্রতি চরমোনাই পীর ফয়জুল করিমের শিক্ষাগত যোগ্যতায় ‘ভুয়া টাইটেল’ লাগানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ফয়জুল বলছেন, আমার ভিসা জটিলতার কারণে ভারতের দেওবন্দে আমি যখন গেলাম, গিয়ে দেখি দাখেলা পরীক্ষা শেষ। সেজন্য আর কাসেমী টাইটেল নিতে পারিনি। তবে আমাকে সবাই কাসেমী বলে ডাকে। আমি এক্ষেত্রে কাউকে নিষেধও করি না আবার ডাকতেও বলি না। আমি নীরব থাকি।
পবিত্র হাদিসে এসেছে ‘নীরবতাই সম্মতির লক্ষণ’। সূত্র: আহমাদ ১৭২৬৯, বায়হাকী ৭/১১০, ইরওয়াহ ১৮৩৬। এই হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, শিক্ষা টাইটেলের বিষয়ে চরমোনাই পীরের নীরবতা পালন করা মানে সম্মতি দেওয়া বা প্রতারণার পক্ষে অবস্থান করা। যেহেতু তিনি সেই শিক্ষা গ্রহন করেননি তাঁর উচিত ছিলো উপাধিটি ব্যবহার করতে মানুষকে বারণ করা বা অনুৎসাহিত করা।মূলত ভুয়া শিক্ষা টাইটেল ‘কাসেমী’ যুক্ত করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন ফয়জুল করিম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মত নয়।’ (মুসলিম : ১০২)
সম্প্রতি বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নেমেছেন কথিত চরমোনাই পীর ফয়জুল করিম। ঠিক এমন সময়ে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন তিনি। শিক্ষা নিয়ে এই ধরনের প্রতারণার বিষয়টি নির্বাচনের আগে নগরবাসী ভালোভাবে নেয়নি। কারণ একজন মাওলানা হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতায় প্রতারণা সূচক টাইটেল ব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।আর এজন্য ভোটের ময়দানে তাকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে বিব্রত হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ট সূত্র।