চরমোনাই পীরের ভন্ডামী নিয়ে যা বললেন দেশের শীর্ষ আলেমরা
বাংলাদেশের একমাত্র হক্বানী পীর দাবী করে থাকেন চরমোনাই। তবে দেশের আলেম সমাজ তাদের এই দাবীর সাথে একমত নন। আদর্শিক মত পার্থক্য, আকিদাগত ভ্রান্ত ধারণা, ইসলাম বহির্ভূত কর্মকান্ড ও রাসূল (স.) কে এড়িয়ে ওয়াজ মাহফিলে বাবাজান, দাদাজানকে ফোকাস করাসহ নানা কারণে চরমোনাই পীরকে হক্কানী পীর নয় বরং তাকে ভন্ড পীর হিসেবে আখ্যায়িত করেন দেশের শীর্ষ আলেমরা।
এ বিষয়ে ড. মাওলানা লুৎফুর রহমান বলেন, চরমোনাইয়ের মুরিদরা জিকির করে চিতকার দিয়ে মাহফিলের প্যান্ডেলের মাথায় উঠে যায় আবার কখনো পীর সাহেবের বুকের উপরে উঠে, এটাকে তারা বলে মারেফত। এগুলো যদি কেউ বুযুর্গি দেখাতে করে সে সাথে সাথে কাফের হয়ে যাবে। যারা তরিকতের নামে মারেফতের নামে সীমালঙ্ঘন করে তারা মোশরেক। তারা দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই হারাবে।
জৌনপুর দরবারের পীর ড. সাইয়্যেদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী বলেন, আমি মনেপ্রাণে চাইতাম দেশে, হেফাজতের মতো অরাজনৈতিক একটা দল থাকুক যারা ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিবে। যারা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করবেনা। কিন্তু চরমোনাই পীর ইসলামী আন্দোলনের অনেক ক্ষতি করেছে, যা আমি জানি। তারা ইসলামের লেবাসধারী শয়তান। তাদের এজেন্ডা ইসলামের ভেতরে থেকে ইসলামের ধ্বংস করা। চরমোনাই পীর সাধারণ মুসলমানদের ঈমান নিয়ে খেলছে।
চরমোনাই পীর নিয়ে মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী বলেছেন, আমি তাকে জাহাজ বাবা বলি। কারণ তার দরবারে জাহাজে করে যেতে হয়। যাওয়ার পরে খেতে গেলে টাকা দিতে হয়, গোসল করতে টাকা দিতে হয়, টয়লেট করতে টাকা দিতে হয়। চরমোনাই টাকা ছাড়া আর কিছু বোঝে না। প্রতিটি মাহফিল থেকে লাখো কোটি টাকা কালেকশন করে, যার কোনো হিসাব নাই। ইসলামের অপব্যাখা, নবীর শানে বেয়াদবি, ইসলামের ইতিহাস বিকৃতি করাসহ নানান ভাবে মুসলমানদের সাথে প্রতারণা করছেন চরমোনাই পীর।
মুফতি আমির হামজা বলেন, কেয়ামতের ময়দানে নাকি চরমোনাই পীরের জাহাজে করেই পুলসিরাত পার হতে হবে । মাহফিলে জিকিরের নামে নাচানাচি করাও নাকি মারেফত! কত বড় শয়তান এরা! এরা মানুষের ঈমান নষ্ট করছে।
ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ময়দানের খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ বলেন, রাসূল (স.) কে এড়িয়ে ওয়াজ মাহফিলে বাবাজান, দাদাজানকে হাইলাইট করে বক্তব্য দেন চরমোনাই পীররা। তারা চান তাদের বাপ-দাদাকে মানুষ নবীর আসনে বসাক। এই ধরনের ইসলাম বিরোধী বাণী প্রচার করে চরমোনাই মূলত: সাধারণ মানুষের ইমান ধ্বংস করছে। অথচ তারাই কিনা দাবি করে দেশের একমাত্র হক্কানী পীর। তারা বস্তুত ভণ্ডকূলের শিরোমনি। এ বিষয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আরো সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।