চরমোনাই পীর: ইহুদি গুপ্তচর!

‘চরমোনাই ফাইল’ ঘাঁটতেই একে একে বেরিয়ে আসছে তাদের পরিবার সম্পর্কে সব চমকপ্রদ তথ্য। উন্মোচিত হচ্ছে পীরদের মুখোশও। ধর্মের নামে ভোটে নেমে মোটা অংকের টাকাও কামিয়ে নিচ্ছেন তারা। এমনকি ধোঁকা দিচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরও। তথাকথিত পীরের ফাঁদে পা দিয়ে ইসলামের সঠিক পথ হারিয়েছেন অনেকেই। এটি পুরোনো কথা। তবে নামের আগে পীর লাগিয়ে ‘ছদ্মবেশে’ ইসরায়েলের হয়ে বাংলাদেশে ইহুদিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে চরমোনাই; এমনই কিছু নতুন তথ্য উঠে এসেছে একটি অনুসন্ধানে।

তথ্যমতে, বর্তমান চরমোনাই পীর সৈয়দ রেজাউল করিমের দাদা মাওলানা ইসহাক ছিলেন চাঁদপুরের উজানি এলাকার পীর ইব্রাহিমের অনুসারী। ‘ধর্ম ব্যবসায়’ এই জেলায় তেমন সুবিধা করতে না পারায় নিজের বানানো কিছু মুরিদ নিয়ে ফিরে যান বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়নে। আর সহজ-সরল লোকজনদের পেয়ে এখানকার কীর্তনখোলা নদীর তীরে গড়ে তোলেন চরমোনাই দরবার।তবে ‘পীরের’ ব্যবসায় বাবা সফল না হলেও ইসহাকের ৩৬ বছর বয়সী ছেলে ফজলুল করিম ঠিকই কাড়ি কাড়ি টাকা বানিয়েছেন। নাম লিখিয়েছেন রাজনীতির খাতায়ও।

মৃত্যুর আগে বিতর্কিত ‘আশেক মাশুক’ নামে একটি বই রচনা করে গিয়েছিলেন কথিত পীর ইসহাক। বইটিতে কিছু কিছু অংশে নিজের ঈমান তথা মুসলমানিত্ব নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেছিলেন এই পীর। ‘আমি কি মুসলমান, না ইহুদি, না অগ্নিপূজক তাহাও বলিতে পারি না’ এমন কথাও লিখেছেন সেই বইয়ে। একই সঙ্গে রয়েছে অনেক শিরকি লেখাও। ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে প্রকাশিত ‘আশেক মাশুক’ বইটি পড়ে অনেকেই ইসহাককে ‘কাফির’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি চরমোনাই পীরদের ইহুদিদের দালাল হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়।

উল্লেখ্য চরমোনাইয়ের বর্তমান পীর ফয়জুল করিম, যিনি এবার বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হাতপাখার প্রতীকে মেয়র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কিন্তু ভোটের মাঠে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে বেড়ানোর পাশাপাশি নিজ স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করছেন এই মেয়র প্রার্থী। শরীয়তকে এড়িয়ে মারেফাতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সহজ-সরল মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃস্টি ও তাদের পথভ্রষ্ট করে প্রকৃত ইসলাম থেকে দূরে রেখে পীর ব্যবসাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে এই পরিবারটি।

এ প্রসঙ্গে ইসলামিক স্কলাররা বলছেন, ইসলাম ধর্ম ধ্বংসে উঠেপড়ে লেগেছে ইসরায়েল বা ইহুদিরা। আর এসব মিশন বাস্তবায়নে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশেই তাদের কিছু এজেন্ট রয়েছে; যারা পীরের ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় মুরিদ বানিয়ে নিজেদের লক্ষ্য হাসিল  করেন। বাংলাদেশে ইহুদিদের  এজেন্ডা বাস্তবায়নে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম ঢাকার দেওয়ানবাগী, জয়পুরহাটের প্রয়াত পীর মুজিবর ও বরিশালের চরমোনাই'র পীর রেজাউল করিম ও ফজলুল করিম।

জানা যায়, ফয়জুল করিমের দাদা সৈয়দ ইসহাক (১৯১৫ - ১৯৭৭) ছিলেন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের আরব ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক প্রধান এজেন্ট 'এলি কোহেন'-এর বন্ধু। মিশরীয় বংশোদ্ভূত মোসাদ'র এই বিখ্যাত এজেন্ট 'এলি কোহেন' আরবি, ফার্সি, উর্দু, হিন্দি ও বাংলাসহ প্রায় ৩৬টি ভাষা জানতেন বলে কথিত রয়েছে। গোয়েন্দা সফলতার ধারাবাহিকতায় তিনি  সিরিয়া সরকারের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হন। যদিও গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ১৯৬৫ সালে তার ফাঁসি হয়।

সুত্রমতে, এলি কোহেন মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও ভারত ও বাংলাদেশে এসেছিলেন একাধিকবার। চরমোনাই পীর ও তার পরিবারের  উত্থানের পেছনে মোসাদ এজেন্ট এলি কোহেনের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে বলে দাবি একটি সূত্রের। মোসাদের অর্থেই চরমোনাই'র দল 'ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ' পরিচালিত হয়। তাদের অর্থ ও প্রভাব বলয়ে রেখে এই রাজনৈতিক দলটিকে শক্তিশালী করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রকৃত ইসলামী শক্তির বিরোধিতা করার এজেন্ডা নিয়েই বর্তমানে চরমোনাই পরিবার ও তার দল কাজ করে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।