হিলি বাজারে নিম্নমুখী পেঁয়াজের দর

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:২১, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর পর হিলি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কমছে। তিন দিনের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতা মহলে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সরেজমিন হিলি বাজারে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা।

বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা খাজির হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে পেঁয়াজের কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা ছিল, এমনটা কল্পনাই করা যায় না। সে সময়ে পেঁয়াজ কিনতে এসে বেশি দামের কারণে ফিরে যেতে হয়েছে। বাড়িতে কিছু পেঁয়াজ ছিল, তা দিয়েই চালিয়েছি। কিন্তু আজ বাজারে এসে শুনি পেঁয়াজের দাম কমছে। তাই ৪০ টাকা কেজি দরে ভারতীয় পেঁয়াজ কিনলাম। এতে অনেকটা উপকৃতই হলাম। কারণ, যেখানে সব জিনিসের দাম চড়া, সেখানে পেঁয়াজের দাম কমছে শুনে খুবই ভালো লাগছে।’

জনি ইসলাম নামে এক পেঁয়াজ ক্রেতা বলেন, ‘৬০ টাকা কেজি দরে দেশি পেঁয়াজ কিনেছি। কয়েক দিন আগে পেঁয়াজের যে দাম ছিল, তখন তো কিনতেই পারিনি। পেঁয়াজের দাম কমায় খুবই ভালো লাগছে। কয়েক দিন আগে যখন পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকায় উঠল, তখন খুবই বিরক্ত লাগছিল। এভাবে অন্যান্য জিনিসের দাম কমালে ভালো হয়।’

তবে দাম কমায় লোকসান হওয়ার কথা জানিয়ে খুচরা বিক্রেতা মাজিদুর বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের অনেক লোকসান হয়েছে। আগে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনেছিলাম। কিন্তু দাম পড়ে যাওয়ায় এখন কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সেলিম বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আসার আগে বাজারে যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল সেটি ছিল পাবনার। সেটির প্রতিমণ ছিল ২ হাজার ৮০০ টাকা। বর্তমানে সে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ২ হাজার ২০০ টাকা। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আসার পর বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।

ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যদি আরও আগে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিত, তাহলে পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকায় নামত। তবে পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে।

এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর দায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপর দেন তিনি।

সূত্র বলছে, বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ৪২টি প্রতিষ্ঠান ৬০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছে।

এদিকে হিলি কাস্টমসের তথ্যানুযায়ী, গত তিন কর্মদিবসে ভারতীয় ৫৮ ট্রাকে ১ হাজার ২৫৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এসব পেঁয়াজের মধ্যে অধিকাংশই ইদ্রো ও নাসিক জাতের।

পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক থাকার কথা জানিয়ে হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই বন্দর দিয়ে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় আমরা শুল্কায়ন শেষে তা দ্রুত ছাড় করছি।’

এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর রশিদ বলেন, ‘প্রতিদিন পেঁয়াজের আমদানি বাড়ছে। অনুমতি পাওয়ার পর আমরা পর্যাপ্ত এলসি (ঋণপত্র) করেছি। আশা করছি, পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।’

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে নিম্নমুখী পেঁয়াজের বাজারে ক্রেতারা কিছু স্বস্তি পেয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Share This Article