বিসিসি নির্বাচন: নৌকায় ভিড়ছে দিকহারা বিএনপি-জামায়াত ভোটার!
- দিন-রাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন মেয়র কিংবা কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
- নির্বাচন ঘিরে বিএনপি হাইকমান্ডের তেমন সিদ্ধান্ত না থাকায় দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে বরিশাল বিএনপিতে।
- দলীয়ভাবে না দাঁড়ালেও বিএনপির কিছু ভোট পাবেন রুপণ।
- শেষ পর্যন্ত তাদের ভোটই নৌকায় বেশি যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জমে উঠেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। দিন-রাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন মেয়র কিংবা কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয়েরও চেষ্টায় নেমেছেন অনেকেই। কিন্তু ভোট নিয়ে সংকট কাটছে না বিএনপি-জামায়াত কর্মী-সমর্থকদের। দলের সরাসরি প্রার্থী না থাকায় কার হয়ে কাজ করবেন; এ নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। ফলে বরিশাল বিএনপি-জামায়াত তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
জানা গেছে, আগামী ১২ জুন বিসিসি নির্বাচন। এখানে মেয়র পদে নৌকার হয়ে লড়ছেন খোকন সেরনিয়াবাত। আর হাতপাখার প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন তথা চরমোনাই’র মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীও রয়েছেন। তবে দলীয়ভাবে না থাকলেও স্বতন্ত্র হিসেবে রয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান ওরফে রুপণ। কিন্তু জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে থাকায় তারা মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারলেও ভোটের মাঠে লড়াই চলছে নৌকা আর হাতপাখার।
তথ্যমতে, নির্বাচন ঘিরে বিএনপি হাইকমান্ডের তেমন সিদ্ধান্ত না থাকায় দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে বরিশাল বিএনপিতে। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসানের পক্ষে কাজ করারও কোনো বার্তা দেননি কেন্দ্রীয় নেতারা। ফলে খোকন সেরনিয়াবাতকে জেতাতে মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের অনেকেই। ইসলামী আন্দোলন নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধ থাকায় হাতপাখা ঠেকাতে নৌকার হয়ে কাজ করছেন এখানকার জামায়াতের নেতা-কর্মীরাও। সব মিলিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররা ত্রিমুখী হয়ে পড়েছেন।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, বরিশাল নগরীতে বিএনপি বা জাতীয় পার্টির তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। ইসলামী আন্দোলন’র একচেটিয়া কিছু সমর্থন থাকলেও এবার বরিশালে ‘ক্লিন ইমেজ’র প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই ব্যক্তি ইমেজ স্বচ্ছ থাকায় খোকন সেরনিয়াবাতের হয়েই কাজ করছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। কেননা বিএনপি-জামায়াত নিয়ে চরমোনাই পীরের নেতিবাচক বক্তব্য ও অতীত কর্মকাণ্ডসহ কিছু কিছু নীতির কারণে আগে থেকেই দল দুটির সঙ্গে বিরোধ রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের। এছাড়া নির্বাচন ঘিরে সব কর্মকাণ্ডেই তাদের নিয়ে বিরোধী কথা বলেছেন মুফতি ফয়জুল করীম। এমন ক্ষোভ থেকেই হাতপাখা ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছে দল দুটি। তবে দলীয়ভাবে না দাঁড়ালেও বিএনপির কিছু ভোট পাবেন রুপণ। আবার কেউ কেউ নৌকা ঠেকাতে হাতপাখার হয়েও কাজ করছেন বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসলে এখন আর কেউ ভোট নষ্ট করতে চান না। কাউকে না কাউকে দিতেই হবে। এজন্য দলের সরাসরি বার্তা না পেয়ে বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ হাতপাখার পক্ষে, কেউ নৌকার পক্ষে আবার কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় নেমেছেন। তবে মতবিরোধের কারণে বিএনপি-জামায়াতের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা হাতপাখার চেয়ে নৌকার প্রার্থীকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের ভোটই নৌকায় বেশি যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।