গাজীপুর সিটি নির্বাচন: ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার’ নির্বাচনের স্বীকৃতি, হেরেও জয় আওয়ামী লীগের!

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৪৪, শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হলো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন ভোটাররাও। ২৫ মে দিনভর ভোট শেষে নতুন মেয়রও পেয়েছেন নগরবাসী। এখানে নগরমাতার আসনে বসছেন জায়েদা খাতুন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই লড়েছেন তিনি। তবে অভাবনীয় ফলাফলে নৌকার প্রার্থী হারলেও ছিল না কোনো অভিযোগ। সব মিলিয়ে গাজীপুরে ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার’ নির্বাচন স্বীকৃতি পেলো সর্বমহলে। তবে ভোটে অংশ না নিয়ে বিএনপি আবারও ভুল করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে এবার নৌকার প্রতীক নিয়ে লড়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমতউল্লা খান। আর টেবিল ঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আর নিরপেক্ষ হওয়ায় ১৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। তবে ফলাফল যাই আসুক তাই মেনে নেবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন আজমত। ফল ঘোষণার পরেও মেনে নিয়ে প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া ভোট লড়াইয়ে ইসলামী আন্দোলন বা চরমোনাই, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য প্রার্থী থাকলেও নজিরবিহীনভাবে কারও কোনো অভিযোগ ছাড়াই ভোট শেষ হয় এবং ফলাফলও মেনে নিয়েছেন সবাই। এমনকি দলীয়ভাবে নির্বাচনে না থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টঙ্গীর প্রভাবশালী বিএনপি পরিবারেরই যে একজন সদস্য ছিলেন তিনিও সুষ্ঠু ভোটে বেশ খুশি। ফলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একরকম নিখুঁতভাবে শেষ হওয়ায় গণতন্ত্রের জয় ও দলীয় সরকারের অধীনেই সর্বোচ্চ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলেও এরই মধ্যে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা।

তথ্যমতে, প্রযুক্তি ও মিডিয়া শক্তিশালী হওয়ায় এখন আর ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। এছাড়া সব নির্বাচনেই বাংলাদেশের দিকে বিশেষ নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেরও। একই ‍সঙ্গে নির্বাচনে বাধা দিলে যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ‘ভিসানীতির’ আওতায় পড়বেন বলে যে থ্রেট রয়েছে সর্বমহলের জন্য তাও গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোপরি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই বদ্ধপরিকর সরকার। আর সেই প্রতিফলনই ঘটেছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে।

এদিকে ‘ভোট কারচুপি’র কথা ভেবেই সব ধরনের নির্বাচন থেকে পিছিয়ে রয়েছে বিএনপি। তবে সিটি নির্বাচনে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অংশ নিতে চাইলেও নারাজ ছিল দলটির হাইকমান্ড। ফলে অনেকেই দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্তু গাজীপুরের নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দিয়েছে শীর্ষ নেতাদের মাঝে। এমনকি অন্তর্দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তারেক রহমান ও ফখরুল ইসলাম আলমগীরও। কেননা ফখরুলপন্থীরা ভোটে যাওয়ার কথা ভাবলেও মেলেনি তারেকের ‌‘সবুজ সংকেত’। শীর্ষ নেতারা দলটির ভুল সিদ্ধান্তের বিষয়ে হাই-কমান্ডকেই দায়ী করছেন এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ভুল সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসারও পরামর্শ দেন।

অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হতে না পারলেও জিতেছে আওয়ামী লীগই। হেরেছে বিএনপি। কেননা গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে জায়েদা খাতুন জিততেই মায়ের হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘গাজীপুরে নৌকার জয় আর ব্যক্তির পরাজয় হয়েছে। আমিও নৌকার মাঝি। আমি জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগ করি। আমি পরীক্ষিত ব্যক্তি। মানুষ আমার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়া দলের সঙ্গে নয়, ব্যক্তিবিরোধ রয়েছে আমার। তাই নগরবাসী আমার মাকে ভোট দিয়ে ‍আওয়ামী লীগকেই জয়ী করেছেন। এতে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গাজীপুরে একটি বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেননা তিনি আগে থেকেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু ভোট চেয়েছেন। তাই নিজ দলের প্রার্থীর পরাজয়ও মেনে নিয়েছেন তিনি। এছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের মা 'প্রতীকী প্রার্থী' জায়েদা খাতুন মেয়র হলেও জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। আর বরাবরের মতো এবারও হেরে গিয়েছে বিএনপি।

Share This Article


উপজেলা নির্বাচন বর্জন : লাভের চাইতে ক্ষতি বেশি বিএনপির!

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সংকটে বিএনপি: প্রকাশ্য বিদ্রোহ!

ফের কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ: ব্রিটিশ ও মার্কিন কূটনীতিকদের তৎপরতা শুরু!

বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম কি কমেছে?

দেশের মানুষের ‘নিরাপত্তা’ নিয়ে ইউনুসের দুশ্চিন্তা: সোশ্যাল মিডিয়ায় হাস্যরস!

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন ১৭ এপ্রিল

আন্দোলন নিয়ে শরিকদের কোনো দিক নির্দেশনা দিতে পারছে না বিএনপি!

কখনোই যাকাত-ফেতরা দেননা ড. ইউনুস!

বিএনপির আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা ছিলো না বলেই সরকার পতন হয়নি: শিবির সভাপতি

পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূসের চালাকিতে ইউনেস্কোর বিস্ময়!

মুজিবনগর সরকারের দক্ষতায় ৯ মাসে হানাদার মুক্ত হয় বাংলাদেশ

সামরিক শাসকের অধীনে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া ইউনূসের মুখে গণতন্ত্র!