আগামী নির্বাচন বয়কট না করতে বিএনপিকে পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্রের!
নির্দলীয়-নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে অনড় মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষমতা হস্তান্তর দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে কারণে সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে দেশটি। ২৩ মে ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘ব্লিটজ’ পত্রিকার এক নিবন্ধে এমন পরামর্শের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কিছু না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই বলে আসছে, দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বিগ্ন।তাই দেশটি যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর চায়। অন্য কোনো শক্তির উত্থান তারা চায় না। এ কারণে বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়াটা জরুরি বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র ।তবে নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সেজন্য পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়াশিংটন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে বলে জানায় সাপ্তাহিকটি।
উল্লেখ্য আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না - এ কথা বিএনপি নেতারা পশ্চিমা বিশ্বকে জোর দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন।এছাড়া ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে দলটির নেতাদের বৈঠক করার খবরও গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেব পরিচিত বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম ওয়াশিংটনের নীতিনির্ধারকদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগকে বাধ্য করার জন্য ‘নিষেধাজ্ঞার হুমকি ব্যবহার করারও পরামর্শ দিচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছে সাপ্তাহিকটি।
অধিকন্তু 'ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিস' নামে একটি কন্সাল্টিং কাম লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি। ব্লিটজ পত্রিকার তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালের আগস্টে যুক্তরাজ্যের বিএনপি নেতা আবদুস সাত্তারের মাধ্যমে ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিস নিয়োগ দিয়েছিল বিএনপি। এ নিয়োগের উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য 'তত্ত্বাবধায়ক সরকার'র প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানানো।
তবে এতোকিছুর পরও বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ওয়াশিংটনের এমন বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সিনিয়র নেতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অনির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা গেলে ক্ষমতার অপব্যবহার হয়। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রও বুঝতে পেরেছে। ২০০৭ সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীণ সরকার ক্ষমতায় আসলে দুই নেত্রীকে বিদেশে নির্বাসিত করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। বিএনপি সেটা অনুধাবন করতে না পেরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে অনড় রয়েছে। বিএনপির উচিত যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শকে গুরুত্ত্ব দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা