সাদিক আব্দুল্লাহ'র আস্থাভাজন সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের চাঁদাবাজি

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৫৬, সোমবার, ২২ মে, ২০২৩, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

ভবনমালিকদের জিম্মি করে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র  আস্থাভাজন সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে। তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান সড়ক পরিদর্শক পদে দীর্ঘদিন নিযুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে থাকার কারণে বিশাল বাহিনী তৈরি করে চাঁদাবাজি করতেন বলে অভিযোগ করেছেন করপোরেশনের খোদ কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা।

 

জানা যায়, ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতকে মাস্টাররোলে ১০ হাজার টাকা বেতনে সিটি করপোরেশনে চাকরি দেন। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই পদে বহাল ছিলেন সাজ্জাদ। মূলত এরপর থেকেই তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন সবাই।

নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন, প্রধান সড়ক পরিদর্শক পদে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত ছাত্রলীগের নামধারী ৫০/৬০ জনের বিশাল বাহিনী তৈরি করেন। তাদের কাজ ছিল ভবনমালিকদের টার্গেট করে টাকা আদায় করা। কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়েই ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করতো তারা। সেই টাকা আদায় করতে বিভিন্নজনের ভবন ভাঙার মৌখিক নোটিশ দিতো, এমনকি আমরা কাউন্সিলর হলেও আমাদের কিছু জানাতেন না সাজ্জাদ। নিজের খেয়াল খুশিমতো চাঁদাবাজি করতেন। চাঁদা না পেলে হয়রানির শেষ ছিল না।

অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, করপোরেশনে কোনো আইন চলত না। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশ ও তার অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাদের কথাই ছিল শেষ কথা। আমরা সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকতাম, কখন চাকরিচ্যুতির নোটিশ পাই। বলা চলে,মেয়রের প্রশ্রয়েই সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রণ করতেন সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত।

২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বলেন, কথায় কথায় বাড়ি ভাঙতে যাওয়া রুটিনে পরিণত হয়েছিল সাজ্জাদের। বরিশাল শহরে  মাস্টাররোলের ১০ হাজার টাকা বেতনের এই কর্মচারী কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছেন, যার সাক্ষী বরিশালের অগণিত মানুষ। মেয়র বলতেন, নগরীতে পুকুর ভরাট করা যাবে না। অথচ সাজ্জাদকে চাঁদা দিয়ে যে কত পুকুর ভরাট হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই।

তিনি আরও বলেন, সাজ্জাদ বাহিনীর কথা যারা শুনতো না তাদেরকে মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করা হতো। তাদের হামলায় সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার সুলতান মাহমুদসহ ১৮ জন আহত হয়েছিল। একজনকে ঘরে ঢুকে কুপিয়ে জখম করেছিল। এমনকি ভুক্তভোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেও পারতো না বলে জানান ওই কাউন্সিলর। 

এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ ফারুখ হোসেন বলেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতকে সড়ক পরিদর্শকের পদ থেকে অনেক আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান এই নির্বাহী কর্মকর্তা।

বিষয়ঃ বাংলাদেশ

Share This Article