নিজের ঘরে প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দিলেন নাসিমা

  নিউজ ডেস্ক
  প্রকাশিতঃ সকাল ১১:১৬, শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২, ৭ শ্রাবণ ১৪২৯

১০ বছর আগে স্বামী পরিত্যক্তা হয়েছেন নাসিমা আক্তার। চার সন্তানসহ স্বামী তাকে তালাক দেন। এর পরে তিনি ঢাকায় গিয়ে অন্যের ঘরে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে সন্তানদের ভরণপোষণ চালিয়েছেন। বড় মেয়ে এখন ইন্টারে পড়ছে। তবে তাদের মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই ছিল না। কিন্তু নাসিমা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে পেয়েছেন নতুন ঠিকানা। গতকাল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে কথা বলতে গিয়ে বেশ আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

নাসিমা আক্তার প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমি অসহায় ছিলাম আপনি আমাকে নতুন ঘর দিয়েছেন। সে ঘরে এখন আমি উঠেছি। আমি এত বেশি খুশি যে, আমি আপনাকে কী দিয়ে খুশি করব, আমার কাছে তো কিছুই নেই। আপনাকে দোয়া করি, আপনি বেঁচে থাকেন। আমাদের মতো অসহায় মানুষের কাছে যেন জনমভর দাঁড়াতে পারেন। আপনার কাছে আমার আরেকটা অনুরোধ, দয়া করে আমাদের কাছে একবার আসবেন। আপনি আমাদের এতকিছু করে দিচ্ছেন। আপনি কি নিজ চোখে আমাদেরকে দেখে যাবেন না? আপনি অবশ্যই আসবেন আমাদের বাসায়, ডাল ভাত খেয়ে যাবেন।’ এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিশ্চয় চেষ্টা করব। নিশ্চয় চেষ্টা করব। আপনারা ভালো থাকেন সেটাই আমি চাই।’

জমিলা খাতুন নামে আরেক উপকারভোগী প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনার ঘর পাওয়াতে আমি অনেক শুকরিয়া আদায় করি। আমি ঘরের ভেতর উঠে দেখি অনেক কিছু আছে। আমি আপনার জন্য নামাজ ও রোজা রেখে দোয়া করি। এই ঘর পেয়ে আমার স্বামী আমার কাছে ফিরে এসেছে। আপনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, আমি অনেক খুশি। আপনি অনেক বছর বেঁচে থাকুন। যেন সবসময় আমাদের দেখে রাখেন।’

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছে ৭৩ পরিবার। এছাড়া আরো বিভিন্ন উপজেলায় ঘর পেয়েছে ২৮৭টি পরিবার। পরিবার প্রতি দুই শতক জমিসহ কংক্রিটের পাকা একটি ঘর প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ দিন জেলার ভালুকা, নান্দাইল, ফুলপুর ও ফুলবাড়িয়া উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে প্রবেশের জন্য মূল সড়ক থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘের একটি সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়েছে। বাচ্চাদের জন্য খেলার মাঠ করা হয়েছে খাস জমিতে। এছাড়া একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে মসজিদ নির্মাণ করা হবে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে যাচাই-বাছাই করে এ পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ১৯৩টি ভূমি-গৃহহীন পরিবার পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৭৯০ পরিবারকে দুই শতক জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে চারটি উপজেলাকে প্রধানমন্ত্রী ভূমি-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। অবশিষ্ট ১ হাজার ৪০৩টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরেই পুরো জেলা ভূমি-গৃহহীনমুক্ত জেলার সম্মান অর্জন করবে, এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

Share This Article